mail.google

মোহাম্মাদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

ঈদুল আযহা মানেই কোরবানির ঈদ। আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে চিরিরবন্দরের কামার শিল্পীরা। কুরবানীর পশু জবাইয়ের অন্যতম অনুসংগ দা, ছুরি, পাতি, বটিসহ বিভিন্ন ধরনের পন্য তৈরীতে ব্যস্ত তারা। যাদের জন্য কোরবানি ফরজ তারাই কোরবানি দেবেন। কোরবানির পশুর মাংস কাঁটাকাটি আর চামড়া ছড়ানোর কাজে চাপাতি, দা, ছুঁরি, বটিসহ কিছু ধারালো জিনিস প্রয়োজন হয়। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চিরিরবন্দরের কামার শিল্পীরা চাপাতি, দা, ছুঁরি, বটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় বিক্রি কম হওয়ায় বিপাকে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে বিক্রি ততো বেশী হবে বলে জানান তারা। ঈদুল আযহার অন্যতম ওয়াজিব পশু জবাই করা। আর জবাহ করার অন্যতম উপাদান এসব পন্য। সারা বছর তৈরীকৃত এসব পন্য যত বিক্রি হয়না তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঈদ মৌসুমে। কারণ হিসাবে জানা যায়, পশু জবাহ করার জন্য ধারালো অস্ত্রের প্রয়োজন। আর পুরাতন এসব অস্ত্রে সবাই রক্ষিত রাখেন না। তাই প্রতি বছর নতুন নতুন অস্ত্রের প্রয়োজন পড়ে। তাই ঈদকে কেন্দ্র করে দা, ছুরি, পাতি ও বটিসহ নানা পন্য তৈরীতে ব্যস্ত কামার শিল্পীরা।
চিরিরবন্দরের সকল হাট-বাজারে এসব তৈরীকৃত পন্য বিক্রি করা হচ্ছে। এসব পন্যের খরচের তুলনায় যত সামান্য লাভে তা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানির সময়টাতে কামার শিল্পীদের কাজের চাপ অনেক বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় তাদের আয়-রোজগারও। ক’জন কামার শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কয়লার অপ্রতুলতায় দাম বেড়ে গেছে। বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। ফলে কামার সম্প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈতিক পেশা পরিবর্তন করছে।
উপজেলার নশরতপুর,সাতনালা, আলোকডিহি, তেঁতুলিয়া, সাইতীড়া, ইসবপুর ,ইউনিয়নসহ ১২টি ইউনিয়নে অন্তত ৬ শতাধিক কামার পরিবারের বসবাস। আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে তাদের পেশায় এসেছে দারুণ ব্যস্ততা। কামার সম্প্রদায়ের কারিগরদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। কিন্তু তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। তিনি আরো জানান, কাজের চাপ বেশি থাকলেও বিদ্যুতের সমস্যার কারণে ঠিক সময়ে কাজ করা যাচ্ছে না।। এদের অনেকে জানান, তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হলেও তাদের পৈতিক পেশাকে এখনো বুকে আকড়ে ধরে আছেন। কিন্তু তাদের সন্তানদের আর এ পেশায় আনবেন না। সন্তানদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন।
এ বিষয়ে গ্রামীণ শহর রাণীরবন্দর খানসামা রোডের কামার শিল্পী গৌতম জানায়, সারা বছর তৈরীকৃত এসব পন্য যত বিক্রি হয়না তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয় ঈদ মৌসুমে তাই সামান্য লাভে বিক্রি করছি। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্পকে টেকসই করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *