চিরিরবন্দর প্রতিনিধি (দিনাজপুর):
বার বার হোচট খেয়ে গম চাষীরা দিশাহারা,ধার দেনা গরু ছাগল বিক্রি ও বিভিন্ন এনজিও থেকে চরা সুদে ঋন নিয়ে লাভের মুখ দেখার আশায় চিরিরবন্দর উপজেলার আলোক ডিহি ইউনিয়নের গছহার গ্রামের গম চাষী অনীল রায় জানায়, ১ বিঘা জমি চুক্তি বাবদ ৫ হাজার, বীজ বাবদ ১৩ শত টাকা , হাল চাষ বাবদ ১৫ শত , রাসানিক সার ২ হাজার , সেচ ১২ শত, কীটনাশক ¯েপ্র ৫ শত , কাঁটা মারাই ৩ হাজার টাকা সহ মোট বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ ১৪ হাজার ৫ শত টাকা হলেও বিঘা প্রতি উৎপাদন হয়েছে ১২ মন । যার বাজার দর মন প্রতি ৬ শত টাকা মন দরে ১২ মন গমের দাম ৭ হাজার ২ শত টাকা হওয়ায় । কম দরে বাজারের বিক্রি করে চাষীরা ন্যায্য মুল্য না পেয়ে বিঘা প্রতি প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে । এমনকি নিরুপায় হয়ে গম চাষীরা জমা জমি বন্ধক রেখে ধার দেনা করে ঋন পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছে। চিরিরবন্দর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূ্েএ জানা গেছে এবারে উপজেলায় ৩ টি খাদ্য গুদামে ৪ শত ৩৩ মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হবে এর মধ্যে রাণীরবন্দর খাদ্য গুদামে ১ শত ৬৩ মেট্রিক-টন , চিরিরবন্দর খাদ্য গুদামে ২ শত ৫০ মে-টন, আমবাড়ি খাদ্য গুদামে ২০ মে-টন গম সংগ্রহ করা হবে এবং এই অভিযান চলবে ৩১ মে পর্যন্ত অথচ গত ১৪ এপ্রিল থেকে সরকারি ভাবে চাষীদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে গম ক্রয়ের কথা থাকলেও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার খামখেয়ালি ও হেয়ালি পনায় দীর্ঘ ১ মাস পর গত ৪ মে রাণীরবন্দর খাদ্য গুদাম গম সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করলেও এলাকার অধিকাংশ গম চাষীরা এ ব্যাপারে কিছুই জানে না । অপর দিকে খাদ্য গুদামের অসাধু কর্মকর্তা ব্যবসায়ি ও নেতাকর্মীর যোগ সাজসে খাদ্যগুদামে অভিনব পদ্ধতিতে গম সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এলাকার নেতা কর্মীরা বিভিন্ন নামে বেনামে ছিলিপ সংগ্রহ করে ব্যবসায়িদের কাছে নগদ টাকায় ছিলিপ বিক্রি করে দিচ্ছে। অন্যথায় ব্যবসায়িরা খাদ্য গুদামের কর্মকতাকে বস্তা প্রতি টু পাইস দিয়ে নিম্ন মানের গম সংগ্রহ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে জানা গেছে চাষীদের কাছ থেকে গম সংগ্রহ করলে কোন টাকা নিতে পারবেনা বলে বিভিন্ন রকম হয়রানি ও তাল বাহানা করে । বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে চাষীরা জানায় আলোকডিহি এলাকার গমচাষী , সকুমার রায়, কলা মোহন রায়, গোপাল রায় ,জিয়াউর রহমান ,আতিকুর রহমান, ফারুক হোসেন, জগদিস রায়, নশরতপুর ইউনিয়নের, ঈস্বর রায়, এনামুল হক ,সাতনালা ইউনিয়নের মো: মুকুল হোসেন, মো: জাকির হোসেন, সহ অনেকে জানায় তারা রাণীরবন্দর খাদ্য গুদামে সরকারি ভাবে গম বিক্রি করতে না পেয়ে লাভের মুখ না দেখে লোকসান গুনছে। অনেকে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের সঠিক তদারকি না থাকায় প্রকৃত গম চাষীরা সরকারী ভাবে খাদ্য গুদামে গম বিক্রি না পেয়ে লোকসান গুনছে অথচ এ মৌসুমে যারা এক ছটাক গম উৎপাদন করেনি তাদের কে তালিকা ভুক্ত করে অভিনব পদ্ধতিতে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেনীর নেতাকর্মীরা । ফলে এতে করে সরকারের ভার্বমূর্তি নষ্ট করছে। জানা গেছে, তারা বিভিন্ন নামে তালিকা দেখিয়ে নগদ টাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টন প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিচ্ছে। এতে করে গমের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লোকসান গুনছে প্রকৃত গম চাষীরা । অপর দিকে লাভবান হচ্ছে এলাকার পাতি নেতাকর্মীরা ও ব্যবসায়ী সহ খাদ্য গুদাম কর্মকর্তারা ।
এ ব্যাপারে রানীরবন্দর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মাজেদুল রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দলীয় নেতাকর্মীর তালিকা অনুযায়ী গম সংগ্রহ করা হচ্ছে আমার কিছু করার নাই।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মাহামদুল হাসান জানান উৎপাদন লক্ষ মাএা অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ১ শত ৩৫ হেক্টর যার ফলন ৩.১৯ মেট্রিক-টন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবুহেনা মোস্তাফা কামাল এর সাথে, কথা হলে তিনি জানান সঠিক ভাবে গম সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং কৃষকদের নিজ নিজ হিসাব নম্বরে টাকা প্রদান করা হচ্ছে। এদিকে ভুষিরবন্দর অগ্রনী ব্যংকের ব্যবস্থাপক মো: মোশাররফ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নতুন হিসাব নম্বর খুলে কৃষকদের গম বাবদ ১৪ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকা উত্তোলন করছে।