দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি ও জামায়াতের ১৩৯ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় দেশীয় অস্ত্র ও জেহাদী বই-পুস্তকও উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরÑ নোয়াখালী: জেলার সেনবাগ উপজেলা থেকে বিএনপি-জামায়াতের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।
শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- সেনবাগ উপজেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়াজুর রহমান, তার ছেলে জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা ওমর ফারুক, উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাফর মেম্বার ও একই ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বেলাল হোসেন।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদেতে রাত ৩টার দিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজারামপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
সেনবাগ থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
চট্টগ্রাম: জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে জামায়াত-শিবিরের ২৪ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সারা রাত বিশেষ অভিযান চলাকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় মিরসরাই থেকে একটি এলজি ও দু’টি পিস্তল এবং ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ নাঈমুল হাছান জানান, অভিযানে সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ২২ জন এবং সীতাকু- উপজেলায় ২ জন জামায়াত-শিবিরের কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে।
সাতক্ষীরা: জেলার আট থানায় নাশকতার আশঙ্কায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ৫৩ কর্মীকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়।
আটক ৫৩ জনের মধ্যে একজন বিএনপির ও বাকিরা জামায়াত-শিবিরের কর্মী বলে জানা গেছে।
জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল জানান, রাতে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযানে সদর থানায় ১৪, কলারোয়ায় ১০, কালিগঞ্জে ১০, আশাশুনিতে চার, তালায় চার, পাটকেলঘাটায় ছয় ও শ্যামনগর থানায় পাঁচজন আটক হয়েছে।
বগুড়া: বগুড়া থেকে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ২০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, দেশী অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
তাদের মধ্যে ধুনট উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির হারুন অর রশিদ (৪৬), শেরপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আজাহার আলীসহ জামায়াত-শিবিরের ১৫ নেতাকর্মী রয়েছেন।
সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) গাজিউর রহমান সাগর জানান, শুক্রবার রাতে জেলার কয়েকটি থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে নাশকতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় জামায়াত-শিবিরের ১৫ নেতাকর্মী ও বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রংপুর: রংপুরে দুই কলেজ শিক্ষকসহ জামায়াত-শিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা পুলিশ কন্ট্রোল রুমের অপারেটর মো. ফরহাদ জানান, রংপুর নগরীর মধ্য আশরতপুর এলাকায় একটি মাদ্রাসায় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ নেতারা গোপন বৈঠক করছেন এমন সংবাদে পুলিশ ওই মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে নয়জনকে আটক করে।
কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী জানান, গ্রেপ্তারদের মধ্যে জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাইদ ও রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজের প্রভাষক এরশাদুল হকও রয়েছেন।
দু’জনই জামায়াতের নেতা বলে জানিয়েছেন ওসি।
এছাড়া মিঠাপুকুর থানা পুলিশ জামায়াত-শিবিরের দুই কর্মী ও পীরগাছা থানা পুলিশ জামায়াতের এক কর্মীকে আটক করেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে জামায়াত নেতা ও জেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি মাসুদ রানাকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিবগঞ্জ বাজারের মনাকষা মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাসুদ রানা শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের সাত রশিয়া গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম ময়নুল ইসলাম জানান, শিবগঞ্জের মনাকষা মোড় থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি ও জামায়াত নেতা মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে।