Kurigram Sitmohol photo-(2) 01.08.16

শফিউল আলম শফি ঃ কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের ১ বছর পুর্তি পালিত হয়েছে। গত বছরের ৩১ জুলাই রাত ১২ টা ১ মিনিটে ৬৮ টি মোমবাতি জ্বালিয়ে ৬৮ বছরের বন্দি জীবনের অবসান ঘটায় ছিটবাসীরা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় সবচেয়ে বড় ছিটমহল কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ার ছড়ায় জেলার অভ্যন্তরের ১২ টি ছিটমহলের মানুষ রাতভর আলোর মিছিলসহ দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখতে দিনভর নানা কর্মসূচী পালন করে।
এক বছর পর একই সময়ে দাসিয়ার ছড়ায় রাত ১২টা ১মিনিটে ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে দিনটির সুচনা করে। সোমবার দিনভর নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে দিনটিকে স্মরন করে বিলুপ্ত ছিটের মানুষেরা।
দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৭৪ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ে সম্মত হয় হাসিনা-নরেন্দ মোদি সরকার। আন্দোলনের পুর্ণতা পায় দু’দেশের ১৬২ টি ছিটমহলের প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ। মুক্তি মেলে মৌলিক অধিকারহীন বঞ্চনাময় জীবনের। বাংলাদেশের ভু-খন্ডের সাথে যুক্ত হয় ভারতের ১১১টি ছিটমহল ও ভারতের ভু-খন্ডের সাথে যুক্ত হয় বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল। বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপ্তাসহ জীবন মান উন্নয়নে একে একে সকল মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হওয়ায় খুশি স্বাধীন ভুখন্ডের নাগরিকত্ব পাওয়া এ মানুষ গুলো। তাই ঠিক ১ বছর পর মুক্ত জীবনে স্মরন করেছে দিনটিকে।
দাসিয়ার ছড়ার আয়শা সিদ্দিকা জানান, আগে আমাদের ভুয়া পরিচয়ে বাংলাদেশের স্কুলে পড়তে হতো। গত ১ বছর থেকে আর মিথ্যা পরিচয়ে চলতে হচ্ছে না। আমরা ছিটের সকল ছাত্র-ছাত্রী আনন্দিত। আমরা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই।
ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ার ছড়া বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দা আলতাব হোসেন জানান, নানা বঞ্চনার জীবন থেকে স্বাধীন দেশের সকল মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পেরে আমরা বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দারা আনন্দিত। আমরা মহেন্দ্রক্ষনের সেই দিনটিকে স্মরন করতে বর্ষপুতি পালন করছি।
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমম্বয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানান, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১ বছর আগে মুক্তি পাওয়া দিনটিকে স্মরন করতে দেশের সবচেয়ে বড় বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ায় রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্জলন করেছি। সকালে মিলাদ মাহফিল হয়েছে। দিনভর খেলা-ধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিানসহ নানা আনন্দ আয়োজনে দিনটিকে পালন করা হয়।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান, ৬৮ বছরের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টিকে দেশের মূল ¯্রােতের সাথে একিভুত করতে বিলুপ্ত ছিটমহল গুলোতে রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বিলুপ্ত ছিটমহল গুলোতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে ছিটবাসীদের দীর্ঘ বঞ্চনাময় জীবনের গ্লানি ভুলিয়ে দিবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা ছিটবাসীসহ সকলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *