ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি॥
ঠাকুরগাঁওয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভক্তিরানী সরকার নামের এক নারী প্রার্থী হয়েছেন। ভক্তিরানী সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। জয়ী হলে তিনিই হবেন জেলার প্রথম নারী চেয়ারম্যান।
ভক্তিরানী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে সালন্দর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। তাঁকে পেয়ে গ্রামের নারী ভোটাররা এগিয়ে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরছেন। সে সময় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হচ্ছে কৌশলের খেলা। এই খেলায় যে এগিয়ে থাকবে, সে-ই জিতবে। নারী প্রার্থী হওয়ায় অনেক সুবিধাও আছে। নারীদের ঘরে ঘরে গিয়ে গণসংযোগ করা যাচ্ছে।
ভক্তিরানী জানান,নারীরাই আমার ভোটব্যাংক। তাঁদের মনেই আমার ভোট লুকিয়ে আছে। নারীর পাশাপাশি পুরুষদেরও বেশ সাড়া পাচ্ছি।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ১৯৮৮ সালে এসএসসি, ১৯৯০ সালে এইচএসসি ও ২০০২ সালে স্নাতক পাস করেন তিনি। স্বামী অশ্বিনী কুমার রায় দেওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক নির্যাতনসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, যৌন হয়রানি বন্ধে এলাকায় নারীদের নিয়ে তিনি কাজ করছেন।
ভক্তিরানী নির্বাচনী মাঠে এবারই প্রথম নন। তিনি এর আগে ২০১১ সালে ইউপি নির্বাচনে সালন্দর ইউনিয়ন থেকে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন। সে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি এই এলাকার নারীদের লাঞ্ছনা-বঞ্চনার অনেক ঘটনা দেখেছেন। ভক্তিরানী বলেন, নারীরা সাধারণত নিজেদের কথা মুখ খুলে বলতে পারেন না। এ কারণে তাঁরা অধিকারও আদায় করতে পারেন না। এই সীমাবদ্ধতার বাঁধ ভেঙে দিতে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
সালন্দর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৭জন। ভক্তিরানী শুধু ইউনিয়নের নন, চেয়ারম্যান পদে জেলার একমাত্র নারী প্রার্থী। তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুব আলম, বিএনপির গোলাম মাওলা চৌধুরী, বিএনপির বিদ্রোহী আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় পার্টির আবদুল কাদের, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলে এলাহী মুকুট চৌধুরী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসিবুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
সালন্দর ইউনিয়নের দেওগাঁও এলাকার নারী ভোটার আসমা বেগম বলেন, ‘পুরুষ চেয়ারম্যান থাকার কারণে নারীরা বোর্ড অফিসে (ইউপি কার্যালয়ে) গিয়ে মন খুলে কথা বলতে পারেন না। এখানে একজন নারী চেয়ারম্যান হলে ভালো হতো। তাহলে মেয়েরা সহজে তাদের সমস্যাবলী খুলে বলতে পারতেন।’