এস.বি-সুজন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :

গত,১৪ ফেব্রুয়ারী সকালে ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই নবজাতক শিশুটির অবশেষে পরিচয় মিলেছে। জানা গেছে, আপন দুলা ভাইয়ের সাথে অবৈধ পরকীয়ার ফলে কুমারী মাতা একটি কন্যা সন্তান জম্ম দিলে সমাজের মানুষের কাছে ঢাকতে শিশুটির মা শিশুটিকে ডাস্টবিনে ফেলে রেখে যায় ।

শিশুটি ডাস্টবিনে ফেলে যাওয়া ও পুলিশের উদ্ধারের বিষয়টি অনেকের মনেই নাড়া দেয় ও পুরো জেলা জুড়ে মানুষের মুখে, মুখে ফেরে।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পেছনের ঘটনা
অবশেষে পুলিশের মাধ্যমে বেড়িয়ে আসল। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ডাস্টবিন থেকে এক নবজাতক কন্যা শিশুকে জীবিত উদ্ধার করেছিল লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ।
তার পরে থেকে, মহিলা পুলিশ সদস্যদের তত্ত্বাবধানে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন নবজাতক শিশুটি।

এদিকে দম্পতিই শিশুটিকে দত্তক নিতে এগিয়ে আসে । আদালত কাউকে না দিয়ে রাজশাহী জেলার শিশুমনি নিবাসে প্রেরণের আদেশ দেন। আদালতের আদেশে পরে গত,২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানার মাধ্যমে রাজশাহী জেলার শিশুমনি নিবাসে প্রেরণ করা হয়।
শিশুমনি নিবাসে প্রেরণের একদিন পরেই ২৪ ফেব্রুয়ারি পাওয়া গেলো শিশুটির আসল পরিচয়।

লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়,গত ১৪ ফেব্রুয়ারী লালমনিরহাট শহরের পৌরসভার খাদ্য গুদামের সামনে একটি ডাস্টবিন থেকে একটি কন্যা শিশুকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সেদিন থেকেই বিভিন্ন ভাবে আসল ঘটনা সামনে আনতে কাজ করে পুলিশ।
বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করে সবকিছু নিশ্চিত হওয়ার পর লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানার নির্দেশনা মোতাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মারুফা জামানের সহযোগিতায় লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহা আলমের ব্যবস্থাপনায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওসি( তদন্ত) শহিদুল ইসলাম লালমনিরহাট শহরের সাহেব পাড়া (সমিল সংলগ্ন) এলাকার বাসায় দুলালের স্ত্রী লুৎফা বেগম (৩৮) ও তার মেয়ে ইসমত আরা ইভা (১৭) কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসলে পড়ে সেখান থেকেই রহস্যের আসল জট খুলতে থাকে।

পরে,দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার নয়ারহাট এলাকার মৃত্যঃ কোরবান আলীর ছেলে জয়নুল সরকার (৩৪)কে কৌশলে লালমনিরহাটে নিয়ে আসলে পুলিশ তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।

থানা পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, উক্ত কুমারী মেয়ের আপন বড় বোনের স্বামী (দুলাভাই) জয়নুল সরকার। শালী ও দুলাভাইয়ের অবৈধ পরকীয়া সম্পর্কের কারনে গত মে মাসে উভয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে লিপ্ত হয় বলে তারা স্বীকার করেছেন।

অপরদিকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল থেকে জানা যায়, দুলাল হোসেন তার ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে গত, ১৪ ফেব্রুয়ারী রাত ১২টা ৫০মিনিটে প্রচুর পেট ব্যাথা নিয়ে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। দুলাল হোসেন তার অসুস্থ মেয়ের কাছে স্ত্রীকে রেখে পড়ে বাড়িতে চলে যায়। তার এ্যাবান্ডী সাইটের ব্যাথা ভেবে রাতেই তাকে স্যালাইন দেয় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় রাত,২টার দিকে বাথরুমের চাপ দিলে সে বাথরুম যায়। এবং বাথরুমেই সন্তানটির জম্ম দেয় । পরে তার মাসহ ভোরের দিকে কৌশলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়ে শিশুটিকে ডাস্টবিনে ফেলে রেখে দিয়ে সেখানে থেকে চলে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *