তাজিদুল ইসলাম লাল, রংপুর
পূবালী ব্যাংক থেকে ডিপিএস এর টাকা উত্তোলনের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ থাকার ৫দিন পর রাহেলা বেগম (৩৫) নামের এক নারীর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ সংরক্ষিত এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় শ্রমিকরা। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি ময়না তদন্তের রমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।  রোববার সকাল ৭টার দিকে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বুড়িরহাট কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পরিত্যাক্ত বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, রংপুর নগরীর ৬নং ওয়ার্ডের বাহাদুরসিং এলাকার ওয়াহেদ আলীর সাথে বিয়ে রাহেলা বেগমের। ওয়াহেদ ২০১৫ইং সালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। এরপর রাহেলা কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পাশেই চেংমারী এলাকার সরকারি আবাসন কেন্দ্রে বসবাস করেন এবং পাশের জুট মিলে চাকরি নেন। এর মধ্যে তার একমাত্র পুত্র সন্তান রায়হান (১৭) টাকা চাকরি করতে থাকেন। গত ৪বছর আগে প্রতিবেশী নাইটগার্ড ও কৃষি ফার্ম শ্রমিক সমিতির সহ-সভাপতি সহিদুল ইসলাম সাইদুলের সাথে পরিচিতির সুবাদে ব্যাংকে ডিপিএসের কিস্তির টাকা তার মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। সেই সুবাদে ব্যাংকের সকল কাগজপত্রাদি তার থেকে যায়। গত সাত মাস আগে ডিপিএসএর মেয়াদ শেষ হলে ৩লাখ ৮০ টাকা থাকায় তা জমি ক্রয় করবেন তিনি। সে সময় এই টাকা উত্তোলনের বিষয়ে কথাকাটি হয় সাইদুলের সাথে। এর আগে গত বুধবার ১৬ ফেব্রুয়ারি রাহেলা জুট মিল থেকে ছুটি নিয়ে টাকা উত্তোলনের জন্য সাইদুলের কাছে আসে। ৪দিন নিখোঁজ থাকলে বড় ভাই মিন্টু গত শনিবার গঙ্গাচড়া থানায় সাধারণ ডাইরি করেন। এর মধ্যে তার ছেলে রায়হানও ঢাকা থেকে রংপুরে আসেন।
কৃষি গবেষনা কেন্দ্রে শ্রমিকরা জানান, রোববার সকালে পরিত্যাক্ত ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বাহিরে মহিলা মানুষের স্যান্ডেল দেখতে পেয়ে রুমের ভিতরে ঢুকলে মরদেহটি দেখতে পায় তারা। পরে পুলিশকে খবর দিলে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এসময় সরেজমিনে দেখা যায়, মহিলাটির পরনের পায়জামা খোলা ছিল, পেটের নাড়ি ভুড়ি বের হয়ে গেছে। মুখ কাপড় দিয়ে মোড়ানো, গলায় কাটা দাগ এবং রক্ত জমাট বাধা। এসময় অনেকে ধারনা করেছেন, ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে সংরক্ষিত এলাকার ভিতরে একজনের পক্ষে এ ধরনের কাজ করা সম্ভব নয় বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
পুলিশ জানায়, কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পাশেই বাড়ি সহিদুল ইসলাম সাইদুলের। তার বাড়িতে গিয়ে তালা দেখা যায়। সে পলাতক রয়েছে।
গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা যাবতীয় আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত করছি। আশা করি দ্রুত এর রহস্য উদঘাটন হবে এবং আসামীদের গ্রেফতার করা যাবে।
রংপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-এ) আবু তৈয়ুব মো. আরিফ হোসেন বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মাথা থেতলানো ও পেটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এটি হত্যাকাণ্ড।
 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *