কবি -স্বপন কুমার বৈদ্য
~~~~~~~~~~~
এক আকাশ ক্ষুধা কিনে নিয়েছিলাম
এক পথ শিশু থেকে
ক্ষুধার যন্ত্রণায় তার হাড়গোড়
যাচ্ছিলো এঁকে বেঁকে
টাকার বিনিময়ে নয় , শুধুমাত্র
একটা পাউরুটির বিনিময়ে, সাথে একটা
সাগর কলা, ছোট্ট একটা মিনারেল
ওয়াটারের বোতল ,
অমাবস্যার অন্ধকারে ঢাকা তার চোখ
দুটো যেন হয়ে উঠলো জোছনা স্নাত আকাশ
আমি যতোবার তাকাই ওর দিকে
ততোবার সেই জোছনা স্নাত আকাশ
থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে জল গড়াচ্ছিলো
আমি তো হতবাক
সেও বিস্মিত, আমার প্রতি তার বুঝি
একটু হয়েছে অনুরাগ ,
মনে মনে ভাবলাম, এক আকাশ
ক্ষুধা কিনে এক আকাশ জোছনা দিলাম
আরো দিলাম আকাশ হতে ঝরে পড়া জল
আমার চোখও তখন অশ্রু ছলছল,
তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এভাবে আর
কতোদিন ক্ষুধা বেচবে ভাই
সে নিষ্পলক তাকিয়ে বলে ওঠে
ও কথার জবাব আমার জানা নাই ;
আমি জিজ্ঞেস করলাম তুমি আর
কি কি বেচো বলবে কি আমায় ?
ও বললো আছে আর কিছু লজ্জা শরম
এ ছাড়া আমার কাছে আর বেচার মতো
কোনো কিছু নাই ;
আমি জিজ্ঞেস করলাম ওসবের দাম কতো ?
ও ভীষণ কাতর সুরে বললো
ফুটপাত থেকে আমার গায়ের মাপে
ছেঁড়া ফাটা কাপড় কিনতে
যতো লাগে ততো ;
আমি আবারো তাকে জিজ্ঞেস করলাম
তুমি কি কখনো ডেকেছো ঈশ্বর ?
ও ভীষণ ইতস্তত হয়ে জবাব দিলো
ডেকে আর কি হবে ? এমনিতেই মরে যাবো
পৃথিবীতে সব কিছুই তো নশ্বর ,
যেমন এই আমার ক্ষুধাও হলো নশ্বর !