নাগেশ্বরী প্রতিনিধি
স্বামীকে হারিয়ে ২ সন্তান নিয়ে দু’চোখে অন্ধকার দেখছিলেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের পশ্চিম রামখানা শিঙ্গিরভিটা গ্রামের দিনমজুর আজগার আলীর মেয়ে বিধবা ফাতেমা বেগম। বাবার অভাবের সংসার হওয়ায় ১৪ বছর তার বিয়ে হয় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দ্বিপেরহাট এলাকার দিনমজুর
মনজুরি আলমের ছেলে মমিন উদ্দিনের সাথে।
অভাবের সংসার হলেও বিবাহিত জীবন সুখেই কাটছিলো এই দম্পতির। এরইমধ্যে তাদের ঘরকে আলোকিত করে এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান। বড় মেয়ে আঁখির বয়স এখন ১২ বছর আর ছেলে ফরহাদের বয়স ৭ বছর। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাকলেও হঠাৎ এক কালবৈশাখি ঝরে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ফাতেমার জীবন। লিভারে পানি জমে গেলো ২ বছর আগে মারা যায় স্বামী মমিন উদ্দিন।
আর এলোমেলো হয় সবকিছু। পরে স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে ফিরে আসতে হয় দিনমজুর পিতার ঘরে। সবখানেই নানা লাঞ্ছনা বঞ্চনার শিকার হলে নিজের ও ২ সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ হয়ে পরে তার। চোখে মুখে অন্ধকার দেখতে থাকে ফাতেমা বেগম।
এরই মধ্যে তার পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ পুলিশের নাগেশ্বরী থানা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি থানায় স্থাপিত নারী শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক এবং গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত গৃহ নির্মাণের ঘোষণা হলে নাগেশ^রী থানা পুলিশের সহযোগিতায় ফাতেমা বেগমেরও গতি মেলে এই তালিকায়। পেয়ে যায় ৩ শতক জমি ও একটি পাকা বাড়ি। যেখানে রয়েছে, বিদ্যুৎ, সেনিটেশন ও সুপেয় পানিসহ অন্যান্য সুবিধাও।
সারাদেশে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় ও গৃহ গৃহহীন পরিবারের মাঝে গৃহ হস্তান্তর করেন। আর সারাদেশের ন্যায় এদিনই নাগেশ্বরী থানা কার্যালয়ে আলোচনাসভা শেষে দুপুরের দিকে তার গ্রামে গিয়ে অসহায় বিধবা ফাতেমার নিকট গৃহ হস্তান্তর করেন থানার অফিসার ইনচার্জ
নবীউল হাসান। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান, ওসি (তদন্ত) তামবিরুল ইসলাম, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব, রামখানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গৃহ পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন ফাতেমা। খুশিতে চোখে জল আসে তার। আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমার স্বামী নেই, চাল চুলো নেই, অতি কষ্টে জীবন যাপন করছি। প্রাণের স্বামীকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলাম। এমন সময় দয়ার সাগর মা জননী মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে থানা পুলিশের মাধ্যমে আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিলো। আমি প্রধানমন্ত্রীর জন্য অনেক অনেক দোয়া করি। দোয়া করি পুলিশ ভাইদের জন্যও।