২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি বলেছেন, ফারাক্কা লংমার্চ ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ। ফারাক্কা লংমার্চের মাধ্যমেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বীজ বপন হয়েছিল। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চ কর্মসূচী সকল আধিপত্যবাদ ও সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামে আমাদের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।
জেবেল রহমান গানি আজ সোমবার সকালে নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪০তম বার্ষিকী স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখছিলেন। ন্যাপ নগর আহ্বায়ক সৈয়দ শাহজাহান সাজু‘র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, জাতীয় দল সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টি (জাফর) যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামিম, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান কাজী ফারুক হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, সম্পাদক মোঃ কামাল ভুইয়া, নগর সদস্য সচিব মোঃ শহীদুননবী ডাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আনছার রহমান শিকদার, সদস্য মোঃ শামিম ভুইয়া, সোলায়মান সোহেল, আবদুল্লাহ আল-কাউছার, জিল্লুর রহমান পলাশ, আবদুল্লাহ আল মাসুম প্রমুখ।
জেবেল রহমান গাণি বলেছেন, নদীমাতৃকার দেশ বাংলাদেশ। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলী, সুরমা, তিস্তা, বরাকসহ অসংখ্য ছোট-বড় নদ-নদী বাংলাদেশকে জালের মতো ছেয়ে রেখেছে। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশ আজ মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভারতের অব্যাহত পানি-সীমান্ত-সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশ আজ তার স্বাধীন অস্তি¡ত্ব¡ নিয়ে টিকে থাকবে কিনা সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আর তাদের আগ্রাসনের পক্ষে কাজ করছে শাসকগোষ্ঠীর ভেতর লুকিয়ে থাকা তাদেরই এ দেশীয় এজেন্টরা।
এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, ভারত উজানের রাষ্ট্র হিসেবে ভাটির দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সৎ প্রতিবেশী হিসেবে আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফারাক্কা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ সরকার টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পক্ষে দেশের স্বার্থবিরোধী ওকালতি করছে। যে সরকার ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তিনি বলেছেন, ভারত মূলত দুটি উদ্দেশ্যে পানি আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে। এর একটি হচ্ছে রাজনৈতিক কারণে পানিকে ব্যবহার করা আর রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও পঙ্গু রাষ্ট্রে পরিণত করা। ভারতের পানি আগ্রাসন রুখতে হলে ১৬ কোটি মানুষের ঐক্যকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর মতো নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।
সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেছেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে বাংলাদেশের শাসকগোষ্টি কখনো সোচ্চার নন। ভারতের পানি আগ্রাসন রুখতে হলে ১৬কোটি মানুষের ঐক্যকে শক্তিতে পরিনত করতে হবে। ভারত সীমান্ত ও পানি নিরাপত্তা দিতে চরম ব্যর্থ হয়েছে।
এএসএম শামিম বলেছেন, ফারাক্কা বাঁধের ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিনত করেছে এবং টিপাইমুখ বাঁধ নির্মানের মাধ্যমে আবারো দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিনত করার যে ষড়যন্ত্র করছে তার বিরুদ্ধে দেশের সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ শাহাজান সাজু বলেছেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর পদর্শিত পথই হচ্ছে ভারতের অব্যাহত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথ। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক হতে হবে সমমর্যাদার ভিত্তিতে কার্যকরী সম্পর্ক। আমরা শুধু ভারতে দিয়ে যাব বিনিময়ে আমরা কিছুই পাবো না তা হতে পারে না।