বিশেষ প্রতিবেদনঃ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে মৃত শিক্ষক স্বামীর সম্পত্তির অধিকার পেতে দ্বারে-দ্বারে ঘুরছে ১ম স্ত্রী। ২য় স্ত্রী ও প্রভাবশালী ভাইদের কাছে পাত্তা না পেয়ে বিভন্নমহলে অভিযোগ করে ছেলেসহ অতিকষ্টে জীবনযাপন করছেন।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাতআঙ্গারিয়া গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের মেয়ে আছিয়া খাতুনের সঙ্গে ১৯৮০সালের নভেম্বরে গোপনে বিয়ে হয় একই এলাকার মৃত আব্দুল কাদের ব্যাপারীর ছেলে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনুর রহমানের সাথে। দুই বছর পর তাদের ছেলে জন্ম নিলে এলাকায় ঘটনা জানাজানি হয়। প্রভাবশালী পিতার ভয়ে আমিনুর স্ত্রী-সন্তানকে বাড়িতে নিতে না পারায় তাদেরকে ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকার কারিগরপাড়ায় মাতবর বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে রেখে এসে মোসরেফা নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। তবে আছিয়া ও তার সন্তানের খরচ নিয়মিত দিত সে।
চলতি বছরের ২ফেব্রুয়ারী আমিনুর হঠাৎ মারা গেলে মা-ছেলেকে না জানিয়ে দাফন করা হয়। খবর পেয়ে দু’দিন পর ছেলেসহ এসে স্বামীর কবর দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে আছিয়া। স্বামীর মৃত্যু পরবর্তী অবসর ভাতা ও স্থাবর সম্পত্তির দাবীতে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের কাছে ওয়ারিশ সনদ চেয়ে না পেয় জীবিকা নির্বাহে ছেলেকে নিয়ে আবারো ঢাকায় চলে যায় আছিয়া। এদিকে চেয়ারম্যান তাদের বাদ রেখে ২য় স্ত্রী ও সন্তানকে ওয়ারিশ সনদ দিলে তাদের নামে ভাতা স্থাপর সম্পত্তির ভাগবাটোয়ার হয়।
এলাকাবাসী আব্দুল করিম আকবর আলী বলেন, প্রথমে গোপন থাকলেও পরে সবাই জেনে যায়। সম্পত্তি দিচ্ছেনা এটাও শুনলাম। সমসের আলী বলেন, বিয়ে হইছে কিনা জানিনা, এ নিয়ে মামলাও হইছে। আব্দুল আজিজ, আকবর আলী, আবুল কাশেম বলেন, বহুত কিছু হইলেও মাস্টারের বাপ মাইনা নেয় নাই। রুহুল আমিন জিন্নাহ বলেন, সরিফুলের ওয়ারিশ সনদের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি এ বিষয়ে আমাকে চুপ থাকতে বলেন। পরে ফিরে আসি। আছিয়ার ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, পেনশন-সম্পত্তির ভাগ প্রথমে দিতে রাজী হলেও পরে চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে বোন ও ভাগ্নেকে বাদ দিয়ে ওয়ারিশ সনদ নেয়। সরিফুল বলেন, আমি হতভাগা। পিতাকে কাছে পাইনি, সম্পত্তি পাচ্ছিনা। আছিয়া বলেন, সে আমাকে ভালবেসে বিয়ে করে পরিবারের সবার চক্রান্তে বাড়িতে না নিলেও আমার দেখাশুনা করতো। স্বামীর সম্পত্তিতে আমার দাবী বেশি; আমি প্রথম পক্ষ।
এ বিষয়ে মৃত আমিনুর রহমানের ছোট ভাই আজিজার রহমান বলেন, গোপনে বিয়ে হলেতো আমার জানা কথা না। তাদের সে রকম ডকুমেন্ট থাকলে অংশ পাবে। ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান রোজেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *