রানীশংকৈল ( ঠাকুরগাও ) সংবাদদাতা ঃ ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার দেহট্ট-ভবানন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোলায়মানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

আব্দুল জব্বার, সৈয়দুর রহমান ও মোকলেসা পারভীন নামে একই বিদ্যালয়ের তিন সহকারী শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক সোলায়মানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

আব্দুল জব্বার, সাইদুর রহমান ও মোকলেসা পারভীন নামে অত্র বিদ্যালয়ের তিন সহকারী শিক্ষক জানান, প্রতিষ্ঠানের কারো সাথে কোন আলোচনা ছাড়াই প্রধান শিক্ষক সোলায়মান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিগত ২০০৯ সালে মোটা অঙ্কের জামানত নিয়ে বিদ্যালয়ের সামনে ৮টি দোকান ঘর বসিয়ে ভাড়া উত্তোলন করছে এবং বিদ্যালয়ের নিজস্ব বিদ্যুৎ মিটার থেকে উক্ত দোকানগুলোতে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে বাড়তি অর্থ আদায় করছে। দোকান ভাড়ার অর্থ ও দোকান ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না করে সে অর্থ নিজেই আত্মসাৎ করে আসছে। এতে আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধুমকি দেওয়া হয়।

দূর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করায় গত জানুয়ারী মাসে আমাদের তিন সহকারী শিক্ষককের বিরুদ্ধে ৪ হাজার ৬শত টাকা চুরির অপবাদ দেয়। প্রধান শিক্ষককের টেবিলের ড্রয়ার থেকে এই টাকা আমরা চুরি করেছি বলে অপবাদ দিয়ে আমাদের চোর সাবস্ত করে। এর প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক আমাদের জোর পূর্বক পবিত্র আল-কোরআনে হাত রেখে কসম খেতে বাদ্ধ্য করে। চুরির অপবাদ থেকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে এক পর্যায়ে বাদ্ধ্য হয়েই প্রধান শিক্ষককের প্রস্তাবে রাজি হই।

এরই প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক সোলায়মানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ২৫ জানুয়ারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে আমরা তিন শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আমাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনিসুর রহমান গত ফেব্রয়ারী মাসের ১১ তারিখে ঘটনাস্থলে এসে প্রধান শিক্ষক সোলায়মানের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনিসুর রহমানকে তদন্তের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি রাগান্নিত্বভাবে বলেন আপনি কে, যে আপনাকে এ সব বিষয় জানাতে হবে বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সোলায়মান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে নিরসণ হয়ে গিয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানে তিন সহকারী শিক্ষক নিরসণের কথা অস্বীকার করেন।
হরিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ইউনুস আলীর মুঠো ফোনের ০১৭২০৫৮২৫৬৪ নম্বরের কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তদন্ত হওয়ার তিন মাস পেরিয়ে গেলোও উপজেলা বা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়ায় শিক্ষকমহল বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাই অতি সত্ত্বর দূর্নীতি ও অনিয়ম পরায়ন প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *