unnamed

আবুল আহসান রিমন:
সিলেট রেলওয়ে ষ্টেশনের অপর নাম ‌-নাই ষ্টেশন’।
নাই শব্ধটি এখানে উচ্চারিত হয় সব সময়ই। টিকেট কাউন্টারে গেলেই বোকারদের মূখে সবসময় শোনা যায় নাই আর নাই। তাই ভোক্তভোগীরা এটাকে রেলওয়েষ্টেশন না বলে -নাইষ্টেশন’ বলতে শুরু করেছেন।
বস্তুতঃ সিলেট রেলওযে ষ্টেশন টিকেট কালোবাজারীদের আখড়ায় পরিনত হয়ে পড়েছে। এমনকি টিকেট কালোবাজারী একশ্রেণীর মানুষের পেশায় পরিনত হয়ে গেছে। তারা এটা করেই তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। প্রচ্ছন্নভাবে তারও সিলেট রেলওয়ে ষ্টেমনের চাকুরে । অন্যদিকে রেলওয়ে ষ্টেশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারী চাকুরীর পাশপাশি এটাকে তাদের ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। বোকার ম্যানেজার। ষ্টেশন মাস্টার-ম্যানেজার থেকে শুরু করে জিআরপি পুলিশ সবাই এ ব্যবসার সাথে জড়িত। সিডিউল মোতাবেক নির্ধারিত তারিখের ১০দিন আগে টিকেট ছাড়া হয় রেলওয়ের।কিন্তু একঘন্টা পরে গেলেই দেখবেন টিকেট হাওয়া হয়ে গেছে। তবে টিকেট মিলে না এমনটা নয়। কলোবাজারীদের কাছ থেকে কিছু বেশী টাকা দিয়ে কিনতে পারলে ট্রেন ছাড়ার একঘন্টা আধঘন্টা আগেই আপনি টিকেট পেয়ে যাবেন। যেসব টিকেট কালোবাজরে বিক্রি হয়না সেগুলো আবার জমা পড়ে টিকেট কাইন্টারে। নিয়মমত টাকা কর্তন করে তা জমা নেয়ার কথা থাকলেও তা টাকা কর্তন না করে নিয়ে অসাধু বোকাররা তাদের কালোবাজারী এজেন্টদের কাছ থেকে সরাসরি জমা নিয়ে ফেলেন। কম্প্উটারে টিপেটাপে ওইগুলো আবার যাত্রীদের দিয়ে দেন। সিলেট রেওয়ে ষ্টেশনে নির্ধারিত সময়েযর পাঁচদিন আগে গেলেও টিকেট পাবেন না। আবার একঘন্টা আধগণ্টা আগে গেলেও মিলে যাবে। কালোবাজারীদের কাছ থেকে ফেরত নেয়া টিকেটগুলো নতুন করে ছাড়া হয়েছে বলে বোকাররা বিক্রি করেন্। সোমবার (২৬সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে১১টায় গিয়ে ঢাকা-সিলেট টিকেট কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায় পূর্বের কাটা অনেক টিকেট বোকার মাসুদের টেবিলে পড়ে রয়েছে। জানতে চাইরে তিনি বরেন এগুলো ফেরত টিকেট। আবার পাঁদিন পরে ট্রেনের টিকেট চাইলে তিনি বলেন নাই। ষ্টেশন মাষ্টারের কক্ষ ছাড়া কোন কক্ষেই কর্মচারী কর্মকর্তাদের উপস্তিতি নেই। স্টেশন মাষ্টারের কক্ষ খোলা থাকরৈও তিনি অনুপস্থিত। তার কক্ষে বসা দুজন কর্মকর্তার সাথে টিকেটের ব্যাপারে কথা হলে তারা জানান, আগামী ৫অক্টোবরের টিকেটও শেষ হয়ে গেছে। অথচ নিয়মানযায়ী ৫ অক্টোবরে টিকেট আজ সোমবার (২৬সেপ্টেম্বর) সকালে ছাড়ার কথা। বেলা ১১টার আগেই হাজার হাজার টিকেট কিভাবে শেষ হয়ে যায় জিজ্ঞেস করলে একজন কর্মকর্তা বলেন, টিকেট কিভাবে শেষ হয় সেটা জানা না থাকলে আপনি বোকার জগতে বাস করেন।রেলওয়ে ষ্টেশনে টিকেট ছাড়ার পর যে যা চাইবে তা দিয়ে দেয়া হবে। এখানে টিকেট করতে অন্যান্য দেশের মত যাত্রীর আইডিকার্ড চাওয়া হয়না বা টিকেটে যাত্রীর আইডি নাম্বারও থাকে না। ট্রেনের টিটিরা আইডির সাথে টিকেট মিলিয়ে দেখেনও না। যে যেভাবে যতটা চাইবে টিকেট কিনে জমা রেখে ব্যবসা করবে বা নিজেই যাবে। এতে কোন বাধবাধ্যকতা নেই।
সূত্রমতে সিলেট রেলওয়ে ষ্টেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিজেরাই গড়ে তুলেছেন কালোবাজারী টিকেট বিক্রেতা সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারা নিজেরাই অধিক দামে টিকেট বিক্রি করে বাড়তি ব্যবসা ও আয় করে থাকেন। প্রত্যেক কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতনের বাইরে টিকেট কালোবাজারী বাবদ মাসিক আয় লাখ লাখ টাকা। তারাও আবার এখানে পোস্টিং পেয়েছেন মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে। টাকা ইনভেস্ট করে পোস্টিং নিলেতো টাকা উঠাতে হয়, লাভও করতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *