এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতায় ফের দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাটে বেলান নদীর গতিপথ বন্ধ করে নির্মিত বিকল্প রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম ভোগান্তি ও দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। গতবছরেও ভাঙনের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বেশ কয়েকবার দয়সারা ভাবে সাঁকো নির্মাণ ও রাস্তা মেরামত করলেও কিছু দিন পর সেগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়।

রবিবার দুপুরে এই ভাঙা দিক দিয়ে গরু পার করতে গিয়ে পানিতে ডুবে এক গরুর মৃত্যু হয়েছে।

খানসামা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশল অফিস ও প্রকল্প সম্পর্কিত তথ্য সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প এলাকায় টাঙানো
বিলবোর্ডে দেখা যায় ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরুর তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২১ হলেও কাজ শুরু হয়েছে ১৫ জুন। কাজ শেষ করার সময় ছিল ১৪ জানুয়ারী ২০২২। কিন্তু সেটিরও প্রায় পাঁচ মাস পার হয়েছে। বন্যা ও দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক অবকাঠামো পূনবার্সন প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি এর বাস্তবায়নে প্রায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকেরহাট টু খানসামা সড়কে বেলান নদীর ওপর ৩৫ মিটার গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে।

গত বছরে বর্ষার আগে ব্রীজের কাজ শেষ করবে মর্মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যানবাহন ও পথচারীদের যাতায়াতে নদীর গতিপথ বন্ধ করে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করেন। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় পানি পারাপারে রিং বসানো হয়েছিল। সেটিও পানি প্রবাহের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। পরে সেই রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পানির চাপে সেই সাঁকোর দু’পার ভেঙ্গে পড়েছে। চলতি বছরে পুনরায় একইভাবে রাস্তা বন্ধ নির্মাণ করা হয়। গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে আবার সেই রাস্তা ভেঙে গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর ওপর নির্মিত বিকল্প রাস্তা গত রবিবার একদিনের বৃষ্টিতে ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহনে চরম ভোগান্তি মুখে পড়ে। প্রয়োজনের তাগিদে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহনে প্রায় ২ কিলোমিটার ঘুরে পাকেরহাট জাকির মার্কেট হয়ে নিউ পাকেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মোড় দিয়ে ভান্ডারদহ, বালাডাঙ্গী, ডাঙ্গপাড়া, খামারপাড়া, হোসেনপুর, সহজপুর ও খানসামাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলায় যাতায়াত করছেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ভান্ডারদহ গ্রামের মাসুদ রানা বলেন, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা ও উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কারনে রাস্তা ভেঙে জনগণের ভোগান্তি চরমে।

তিনি আরো বলেন, পাকেরহাট একটি গুরুত্বপূর্ণ হাট। এই হাটে কোটি টাকার উপরে রাজস্ব আদায় করে সরকার।
এখানে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও অবস্থিত। হাটে প্রতিনিয়ত কাঁচামাল সহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় ও বিক্রয় হয়। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে ভোগান্তির সাথে অর্থ ও সময় দুটিই অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে।

কইনাডুবী ব্রীজ নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম.এস বসুন্ধরার ম্যানেজার বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটি নির্বিঘ্নে চলাচল উপযোগী করা হবে।

এবিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বলেন, নদীর পানির গতি প্রবাহ বন্ধ না করে বিকল্প রাস্তা হিসেবে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। তবুও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি কেন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *