কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ওই ব্যক্তি উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
জমির মালিক আব্দুল খালেকের দাবি, ক্রয়সূত্রে ওই ২১শতক জমির মালিক তিনি। ভূলবশতঃ তা খাস খতিয়ানের আওতাভূক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর দলদলিয়া ইউনিয়নের কাজী পাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে কবলা দলিলে ২১শতক জমি ক্রয় করেন। প্রতিবেশি মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল খালেক। এসএ খতিয়ানে ওই জমির মূল মালিকের নামে রেকর্ড থাকলেও ক্রয়ের পর আরএস খতিয়ানে আব্দুল খালেকের নামে রেকর্ডভূক্ত না হওয়ায় তা খাসভূক্ত হয়ে যায়।
জমির মালিক আব্দুল খালেকের ছেলে নূর মোহাম্মদ বলেন, দাগ নং-৯৪০ এ ২১ শতক জমি আমার বাপ ক্রয়সূত্রে মালিক। দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভোগ দখল করে আসছি, হঠাৎ শুনি এই জমি নাকি খাস হয়ে গেছে। এই জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভুল করে বিরোধপূর্ণ জমির পাশে থাকা ৯৩৭ নং দাগে ১৫ শতক জমিতেও আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে বড় বড় গাছ ও বাঁশঝাড় ছিল, তা সব কেটে সাবার করা হয়েছে। ভূমি অফিসের লোকজন আমাদের কোন কথা শোনেনি।
তবে এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করলে, গত ১৮ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) আদালত ১৫দিনের সময় বেঁধে দিয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে (ইউএনও) কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
সরেজমিনে গত শনিবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিরোধপূর্ণ জমিতে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণের কাজ চলমান। আশপাশে বাঁশ গাছের স্তুপ পড়ে আছে। এ সময় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কোনদিন তো শুনি নাই এ জমি খাসের। এখন শুনতেছি এটা নাকি খাসের জমি।
দলদলিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী আহসান আহম্মেদ বলেন, ওই জমি খাস হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। পরে সার্ভেয়ার সেখানে সীমানা নিধার্রণ করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, কুড়িগ্রামে মিটিংএ আছি এ ব্যাপারে পরে কথা হবে।
ইউএনও বিপুল কুমার বলেন, আদালতের নোটিশ পাওয়ার পর আমরা সুস্পষ্টভাবে জবাব দিয়েছি। তবে উনি যেসব অভিযোগ করছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, এসিল্যান্ড সেখানে যেভাবে অত্যাচার শুরু করছে, একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে কোনভাবেই তা মেনে নেয়া যায় না। সরকারি ঘর নির্মাণে, জায়গা না থাকলে, জমি কিনে ঘর নির্মাণ করার নির্দেশনা আছে। কিন্ত অনেকটা জোর জবরদস্থি করে সেখানে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *