পরিতোষ কুমার বৈদ্য,শ্যামনগর প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় টিকে থাকতে লবণ পানি অপসারণের দাবী জানিয়েছেন দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের সকল স্তরের জনগণ। তারা বলেছেন জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে দেশের উপকূলের জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এই সংকট মোকাবেলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানির নিশ্চিয়তাসহ উপকূলের জীবন-জীবিকা রক্ষায় কর্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

আজ বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় লিডার্স এর সহযোগিতায় কয়রা উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরাম, কয়রা উপজেলা যুব ফোরাম, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন জলবায়ু সহনশীল ফোরাম এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এই দাবী জানান হয়। উক্ত মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়ল, সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের নির্বাহী সদস্য নিলীমা চক্রবর্তী, আরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য তুলে ধরেন প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আবু সালাম খান, ইউনিয়ন জলবায়ু সহনশীল ফোরামের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শাহআলম গাজী, সুপার আব্দুল মাজেদ, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিমাই চন্দ্র মন্ডল, শিক্ষক নিমাই চন্দ্র মিস্ত্রী, শিক্ষক মতিউর রহমান, শিক্ষক ওমর আলী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি জাফর মোল্যা, বাজার কমিটির সভাপতি রাধাপদ মন্ডল, সিআরজি দলের সভাপতি মুকুল বিশ্বাস প্রমূখ।

লবণ পানি অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় কৃষি জমিতে লবণ পানি উত্তোলন করে চিংড়ী চাষ করায় দিন দিন কৃষি জমির লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফসল চাষের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। কয়রা উপজেলায় লবণ পানির চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা ৪,২০০ টি, যার আয়তন প্রায় ৩,৭০০ হেক্টর। লবণ পানির চিংড়ি ঘেরে বেড়িবাঁধ কেটে এবং পাইপ বসিয়ে লবণ পানি উত্তোলন করে, যা বাঁধকে আরও বেশি দুর্বল করে তুলছে। ফলে অল্প জোয়ারেও বেড়িবাঁধ প্লাবিত হয়ে লবণ পানি প্রবেশ করে জীব-বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করছে। মানুষ জীবন-জীবিকা হারিয়ে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে অথবা স্থানান্তরিত হয়ে অন্য জায়গায় বসতি স্থাপন করছে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, জনগণের আকাঙ্খাকে গুরুত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দু’টি মেগা প্রকল্প নিয়েছে। কিন্তু এখনো সেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়নি। জনস্বার্থে দ্রুত ওই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে সকল ঘের ও ক্লোজারের লবণ পানি অপসারণের দাবী জানান হয়। জলবায়ু পরিবর্তন ও দূর্যোগকে মাথায় রেখে সকল পোল্ডারে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মান করতে হবে। উপকূলীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। “একটি বাড়ি একটি শেল্টার” ডিজাইন তৈরি করে মডেল বাড়ি নির্মান ও এই বাড়ি নির্মানে প্রনোদনা দিতে হবে। এই সাথে সুন্দরবন সুরক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *