অনির্বাণ সাহা
***********
হেলে পড়া বটগাছে হেলান দিয়ে
গুনে চলছিলাম নদীর ঢেউ-
কখনো ছোট, কখনো বড়ো এসে
তালগোল পাকিয়ে দিচ্ছিল হিসেবের গুনতি।
কতো ঢেউ মাঝপথেই ভেঙ্গে যায়।
হিসেব কড় গুনে রাখিনি আর।
আবহমান বয়ে চলা এক কক্ষপথে
জোয়ার ভাটার টানে নিস্তরঙ্গ নদী
ফুলে ফুঁসে ফেঁপে ওঠে নিজ ছন্দে-
তাতেই তার রূপ, চরিত্র নির্ধারিত হয়।
সেদিন সন্ধ্যা হয় হয় গোধূলির আলোয়
এসে দাঁড়ালাম নদীর মরা চরে।
ওপার থেকে ভেসে আসা আযানের ধ্বনি
কুলায় ফিরা পাখিদের ডানার ঝাপটানি,
বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দের সাথে
নদীর বহতি স্রোতের মৃদু কল্লোল
নৈসর্গিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তুলছিল।
কান পেতে শুনতে পারছিলাম জীবনের গান।
দিকচক্রবালে তখন লাল আবীরের মাখামাখি
বসে পড়লাম ধরিত্রী মার বুকের গন্ধ নিতে।
আকাশে তারাদের আনাগোনা বেড়ে চললো।
মুগ্ধ চোখে গিলে খাচ্ছিলাম সপ্তর্ষি মন্ডল।
একফালি বাঁকা চাঁদের আলোর মুসকান
আমার মুখের উপর ছড়িয়ে পড়ছিল।
অপলক দৃষ্টিতে উপভোগ করছি আমি
প্রকৃতির রূপশোভা, সৌন্দর্য আর লাবণ্য।
ভাঙ্গা ভাঙ্গা ঢেউএর মাথায় আলোর নাচন
কেমন পাড়ের পায়ে এসে লুটিয়ে পড়ে।
আস্তে আস্তে ভিজে যাচ্ছে আমার শরীর।
উঠে দাঁড়াই নক্ষত্ররাশি খচিত চাদরের নিচে।