উলিপুর প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে চুরির অপবাদে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তার মা ফিরোজা বেগম থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই রবুরায় গ্রামে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবারসূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম-ফিরোজা বেগম দম্পতির সপ্তম শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে ফুয়াদ আলী (১২) গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ির পাশে মানিক মোড়ে খেলতে যায়। এসময় কয়েকজন লোক এসে তাকে খুঁটির সাথে সাইকেলটি রেখে ডিশ লাইনের সরঞ্জামাদি চুরির অপবাদ দেয়। পরে তারা তাকে ধরে পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের নিধিরাম বানিয়াপাড়া গ্রামের ডিশ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়।
এসময় ডিশ লাইনের সরঞ্জামাদি চুরির অপবাদে নজরুলের বাড়িতে আটকে তাকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাঠি, রড, প্লাস, হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
পরে খবর পেয়ে ফুয়াদের চাচা জাহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় কয়েকজন নজরুলের বাড়িতে গিয়ে তাকে আটক অবস্থায় দেখতে পায়। এসময় নজরুল ইসলাম ডিশের মালামাল চুরি বাবদ ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাদের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করেন।
পরে আলোচনাসাপেক্ষে ৮ হাজার টাকা দিয়ে ফুয়াদকে ছাড়িয়ে নেন স্বজনরা।
এ বিষয়ে ফুয়াদ বলেন, আমি কোনো কিছু চুরি করিনি। পোলের সাথে সাইকেল রাখছি। সেখান থেকে কয়েকজন লোক নজরুল ইসলামের বাড়িতে এনে আমাকে বেঁধে পিটিয়েছে। হাতুড়ি, প্লাস, লোহা, পেরেক গায়ে গেঁথেছে। পরে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর কি হয়েছে আমার মনে নেই।
ফুয়াদের মা ফিরোজা বেগম বলেন, আমার ছেলে এলাকায় শান্ত, ভদ্র ছেলে হিসেবে সবাই চেনে। সে কোনো চুরি করতে পারে না। চুরির অপবাদ দিয়ে এভাবে কেউ কাউকে মারতে পারে না। ছেলেকে জিম্মি করে এক লাখ টাকা দাবি করেছিল। পরে ছেলেকে বাঁচাতে ৮ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছি। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৩ দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে আজ রিলিজ নিয়ে বাসায় এনেছি।
এ বিষয়ে উলিপুর থানায় আমি নিজে লিখিত অভিযোগ করেছি।
অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ডিশের লাইনের তার, মেশিন বেশ কয়েকবার চুরি হয়ে গেছে। ঘটনার দিন এক গ্রাহকের কাছে ফোনে শুনতে পাই ফুয়াদ পোলে চড়ে মেশিন খুলছিল। আমি গিয়ে সেখানে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসি। ফুয়াদের স্বজনরা এসে ৮ হাজার টাকা দিয়ে মিটমাট করে চলে যায়।
উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ ব্যাপারে একটি নিয়মিত আইনে মামলা হয়েছে। আসামি ধরার অভিযান চলছে।