তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রামঃ
উলিপুরে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক মৃনাল কান্তি রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মোঃ তারিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর এক সহপাঠীর বক্তব্য, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর শারীরিক গঠন দেখে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সত্য বলে প্রতীয়মান হওয়ায় এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ভোরের কাগজে ” উলিপুরে শ্লীলতা হানির বিচার না পেয়ে স্কুল ছাড়ল এক শিক্ষার্থী” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নড়ে চরে বসে। উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঘটনার দীর্ঘ এক মাস তিন দিন পর গতকাল (২ নভেম্বর) বুধবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি অভিযুক্ত ওই শিক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
উল্লেখ্য, উলিপুর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক হিন্দু শিক্ষার্থী গত ২৭ সেপ্টেম্বর ধর্মক্লাস করতে গিয়ে ঐ বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক মৃণাল কান্তি রায়ের দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হন। প্রধান শিক্ষকের মৌখিক নির্দেশ মৃণাল কান্তি ষষ্ঠ শ্রেণীর ধর্মক্লাস নিতো বলে জানা গেছে । অনৈতিক এ ঘটনার পরপরই ষষ্ঠ শ্রেণীর ওই শিশু শিক্ষার্থী বিষয়টি তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের জনৈক এক শিক্ষিকাকে অবহিত করেন। শিক্ষার্থীর ভাষ্যমতে ঘটনা শোনার পর ওই শিক্ষিকা বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন এবং সাথে সাথে ঘটনাটি প্রধান শিক্ষকে অবহিত করেন। এরপর বিদ্যালয় দূর্গাপুজার দীর্ঘ ছুটিতে গেলে বিষয়টি ধামাচাপা দেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয় খোলার পর শিশুটি আর বিদ্যালয়ে আসেনি। এব্যাপারে তার পরিবারের লোকজন লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় ওই বিদ্যালয় থেকে ক্ষোভে ছাড়পত্র নেন তার পরিবার। তখনই বিষয়টি সংবাদ কর্মীদের নজরে আসে এবং স্পর্শ কাতর ঘটনাটি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হয়।
এদিকে,তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস কবির রানু স্পর্শকাতর এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘটনাটি মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে প্রতিবাদ ছাপালে খোদ প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এঘটনায় বিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস কবির রানুর কাছে কোন অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রন্থাগারীককে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন,পত্রিকায় খবর ছাপা হওয়ায় বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে সেজন্য বরখাস্ত করা হলো।