কলকাতা প্রতিনিধি
আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর সোমবার ২০২৪ তিনটে থেকে রাত্রি আটটা পর্যন্ত কলকাতার নলিনী গুহ সভা হলে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হবে ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক আমার ভারত পত্রিকার উন্মোচন ও গুণিজন সংবর্ধনা।
প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরেও আন্তর্জাতিক আমার ভারত পত্রিকা বাঙালি বিশ্বকোষ এবং সহযোগী আশা ফাউন্ডেশন এদের যৌথ উদ্যোগে ভারত এবং বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন প্রান্তের ১০০ জন কবি সাহিত্যিক শিল্পী দানশীল ব্যক্তিত্বকে সম্মানিত করা হবে।
উক্ত অনুষ্ঠান মঞ্চে বিশ্বে এই প্রথম একটি বিশেষ নামে পুরস্কৃত হবেন উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ।
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে (বর্তমানে কফি হাউস) বক্তব্য রাখতে গিয়ে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় বলেছিলেন, ‘আগামী স্বাধীন ভারতের বাঙালি জাতির জাতীয় কবি হবেন কাজী নজরুল ইসলাম।’ সেদিন একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস।
১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ দ্বিখণ্ডিতকরণের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। পাকিস্তান নামীয় যে দেশটি সৃষ্টি হয়, তা হয় দ্বিখণ্ডিতকরণের মধ্য দিয়ে। বাংলা ভাষাভাষী মানুষ দু’টি দেশের কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে যায় দুই দিকে।
তৎকালীন সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের উর্দু ভাষাভাষী মানুষ ছ’কোটি এবং পূর্ব পাকিস্তান যা বর্তমান বাংলাদেশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ সাত কোটি। শুরু হয় ভাষাগত আন্দোলন। রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসাবে বলপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া হয় উর্দু। দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা আপন ভাষার অধিকার জারি রাখে। ১৯৭১ সালে প্রায় নয় মাস ধরে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে একটি ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আপন ভাষার অধিকার রাখতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা হয় বাংলা। আর সেই বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। অবিভক্ত ভারতের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে কবির জন্ম। রাষ্ট্রীয় মর্যাদা-সহ কবি পরিবার বসবাস শুরু করেন বাংলাদেশে।
বিশ্বের অসহায় মানুষের কবি, প্রেমের কবি, বিপ্লবী কবি, সাম্যবাদের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর জীবন, আত্মকাহিনি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের সাথে সাথে ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীময়। আজ পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রে বাংলা ভাষাভাষীর মানুষের উপস্থিতি ঘটেছে। আর সেই বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জাতীয় কবি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি শুধু আজ আর বাংলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তিনি আজ বিশ্বময়, তিনি আজ বিশ্বকবি, তাঁর সেই ১৯৩১ সালের কুলি মজুর কবিতা তিনি দার্জিলিংয়ে বসে লিখেছিলেন, ১৯৩১ সালে তাঁর লেখা আমাদের মনে করিয়ে দেয় আজ,
‘‘দেখিনু সেদিন রেলে
কুলি বলে এক বাবু সাব
তারে ফেলে দিল নিচে ঠেলে-
চোখ ফেটে এল জল
এমনি করে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল।’’
তিনি তো সেদিন জগতের মানুষের কথা ভেবেছিলেন। তাঁর হৃদয়ে জগতের অসহায়, অবহেলিত, অবদমিত, পদদলিত, মানুষের কথা তিনি লিখেছেন। তিনিই তো আমাদের বিশ্বকবি কাজী নজরুল ইসলাম।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ আমরা ১০০ জন গুণী মানুষের সঙ্গে উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদকে ‘বিশ্বকবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি সম্মান’ পুরস্কারে পুরস্কৃত করতে চলেছি।
আপনার আসুন সকলে। অবাধ প্রবেশ। বাঙালি জাতির জাতীয় কবি, বিশ্বকবি কাজী নজরুল ইসলাম নামীয় পুরস্কারে এই প্রথম বিশ্বে আমরা এক নতুন ঐতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছি, আপনারাও শামিল হন। আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আব্দুল করিম শিশু সাহিত্যিক মুখ্য ব্যবস্থাপক ‘বাঙালি বিশ্বকোষ’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *