মোঃ হাসান আলী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যমুনার তীর রক্ষা বাঁধের অন্তত ১৫০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অবৈধভাবে যমুনা নদীর তীরে স্তূপ করে রেখে বালু ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় এ ধস দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সাড়ে তিনটা থেকে কাজিপুর উপজেলার মেঘাই ১ নম্বর স্পারের উজানে এ ধস দেখা দেয়। খবর পেয়ে ধস ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোর থেকেই জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ করেই ধসে যেতে থাকে নদী তীর রক্ষা বাঁধ। এ সময় বাঁধের পাশে নোঙর করে রাখা জেলেদের ৩০টি নৌকা মাটিচাপা পড়ে যায়। অপরদিকে বালু ব্যবসায়ীদের স্তূপ করে রাখা বালুর একটি বড় অংশও নদীতে চলে যায়। ভাঙনের ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে কাজিপুর থানা, খাদ্যগুদাম, মডেল মসজিদ, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

এলাকাবাসীর দাবি, কতিপয় অসাধু ব্যক্তি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ম না মেনে নদী তীরের ১০ ফুটের মধ্যে বালু স্তূপ করে রেখে ব্যবসা করার কারণেই এ ধস দেখা দিয়েছে। গত ২০ জুলাই ওই বালুর পয়েন্ট অপসারণের জন্য পাউবো ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও বালুর স্তূপ সরানো হয়নি।

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাজি মো. অনিক ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রাত সাড়ে তিনটার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বিপ্লব আমাকে ভাঙনের বিষয়টি জানান। তখনই উপজেলা চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাই এবং পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। সকাল ৬টা থেকে পাউবো জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছে। রাতে ভাঙনটা বেশি ছিল। এখন একটু কম।
তিনি বলেন, ইউএনও ভারতে প্রশিক্ষণে রয়েছেন। বালুর স্তূপ রাখা নিয়ে অভিযোগটি ইউএনও স্যার পেয়েছেন কিনা জানা নেই। তবে আমরা নদী তীর থেকে বালু সরানোর জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছিলাম। এরপর সেখান থেকে তারা বালু অপসারণও শুরু করেছে, কিন্তু পুরোপুরি করে উঠতে পারেনি। ভাঙনে তাদের বালিরও একটি বড় অংশ নদীতে চলে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, ওখানে আমাদের প্রটেকটিভ বাঁধ ছিল। ভোর রাতের দিকে ওই সেখানে ধস শুরু হয়। সকাল পর্যন্ত অন্তত দেড়শ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে আমরা ভোর থেকেই সেখানে জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।
তিনি বলেন, বালু ব্যবসায়ীদের ড্রেজারের ভাইব্রেশনের কারণে বাঁধ দুর্বল হতে পারে। এ ছাড়াও গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপকভাবে বাড়ছে নদীর পানি। রয়েছে তীব্র স্রোত। এসব কারণেই ভাঙন দেখা দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *