কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে একই গ্রামে একাধিক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আতংকে গ্রামের মানুষ। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবী গভীর রাতে একটি মটর সাইকেলের শব্দ শোনার পরেই ঘটছে আগুন লাগার ঘটনা।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাঘডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা গহুরন বেগম। তার গো খাদ্য রাখা খড়ের গাদায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে আকষ্মিকভাবে আগুন লেগে পুড়ে যায়। তার মতো আব্দুর রহিমের বাড়ির রান্না ঘরে এক সপ্তাহে তিনবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে গভীর রাতে। গত দেড় মাসে শুধু ওই গ্রামে ১০/১২টির অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রহস্য ঘেরা এসব আগুনের ঘটনা ঠেকাতে রাত জেগে গ্রামের মানুষ পাহারা দিলেও প্রতিকার মিলছে না। ফলে আগুন আতংকে দিন কাটছে গ্রামের মানুষের।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রতিটি আগুন লাগার ঘটনার আগে একটি মটর সাইকেলের শব্দ পাওয়া যায়। এই মটরসাইকেল চলে যাওয়ার পর পরই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ ১২ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে আব্দুর রহিম মিয়ার রান্না ঘরের চালে। এছাড়াও একই গ্রামের ইউসুফ আলী, ফজলুল হক, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ আলী, মজিদ মিয়াসহ দেড় মাসে প্রায় ১০/১২টি খড়ের গাদায় আগুন লাগে। ফলে আগুন আতংকে রাত-দিন পার করতে হচ্ছে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির মানুষকে। কে বা কারা আগুন দিচ্ছে রাত জেগে পাহাড়া দিয়েও তাদের ধরতে পারছেন গ্রামবাসী। রহস্য উৎঘাটন হচ্ছে না মটরসাইকেল যাওয়া শব্দের। গ্রামবাসীর অনেকে ধরেই নিয়েছে এগুলো জ্বীন-ভুতের কাজ। গ্রামের সচেতন মানুষের দাবী গ্রামের শান্তি ও সৌহার্দ্য সম্পর্ক নষ্ট করতে এমন আতংক ছড়ানো হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে এদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।

ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম জানান, গত দেড় মাসে আমাদের এখানে ১০/১২টি বাড়ির আঙ্গিনায় খড়ের গাদায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোন লাভ হয়নি। আমরা এখন রাত জেগে পাহারা দিয়েও কাউকে ধরতে পারছি না। এদিকে আগুন লাগানোর কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

অপর ভুক্তভোগী গহুরণ বেগম জানান, বাড়ির আঙ্গিনাতে গরুর খড়ের গাদায় রাত ৩/৪টার দিকে কে বা কারা এসে আগুন দিয়ে যাচ্ছে। গ্রামবাসী এবং ফায়ার সার্ভিস মিলে আগুন নিভিয়েছে। এখন আমরা পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তা আর ভয়ে রাত পার করছি।

গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা গ্রামের সবার সাথে কথা বলেছি, গ্রামে কারও সাথে কোন বিবাদ নেই। তারপরও কেন যে এরকম ঘটনা ঘটেছে বুঝতে পারছি না।

মজিদ মিয়া বলেন, গ্রামের শান্তি ও সৌহার্দ্য বিনষ্ট করতে আতংক ছড়ানো হচ্ছে। প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক।

নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের অফিসার ইমন মিয়া বলেন, বেশীরভাগ আগুন লাগার ঘটনায় আগুনের উৎস পাওয়া গেলেও গভীর রাতে খড়ের গাদায় আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত উপজেলায় ৩৫টি অগ্নিসংযোগের ঘটনার মধ্যে ২৪টি বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা খড়ের গাদায় লেগেছে।

নাগেশ্বরী থানার ওসি তদন্ত মোঃ সারোয়ার জাহান বলেন, বাঘডাঙা গ্রামে আগুন লাগার ঘটনায় মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি।তবে কেউ এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দেয় নাই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *