তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম :
কুড়িগ্রামে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে তারই প্রতিবেশী এক যুবক শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাড়ির পাশে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রেখেছে। আজ বুধবার (৭ জুন) সকালে সদর থানা পুলিশ গর্ত থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কিশোর সঞ্জয়কে পুলিশ আটক করেছে।
লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে, বুধবার ভোররাতে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের ধনঞ্জয় গ্রামে ।
হত্যাকাণ্ডের শিকার শিক্ষার্থী সীমিত চন্দ্র (১২)ওই গ্রামের মানিক চন্দ্র ড্রাইভারের পুত্র এবং অভিযুক্ত সঞ্জয় (১৬) একই গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র (দর্জি’র) পুত্র।
হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুটির পারিবারিক সূত্র ও পুলিশ জানায়,বুধবার ভোররাতে ধর্মীও অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের গীতা সংঘ অনুষ্ঠানে যায় সিমিত ও তার বড় ভাই। একপর্যায়ে বড় ভাই ছোট ভাই সিমিতকে অনুষ্ঠানস্থলে রেখে বাড়িতে ফেরে আসে। পরবর্তীতে অনুষ্ঠানস্থল থেকে ফেরার পথে সিমিতের সাথে অভিযুক্ত কিশোরের ঝগড়া হয়।
জনশ্রুতি পাওয়া গেছে, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে, অভিযুক্ত সঞ্জয় অত্যন্ত কৌশলে পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া সিমিতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এর পর তাদেরই একটি পরিত্যাক্ত বাড়ির পেছনের গর্তে সিমিতের নিথর মরদেহ পুতে রাখে।
এদিকে, গীতা সংঘ শেষ হলেও সিমিত বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা তার খোঁজে বের হয়। পরিবারের লোকজন অভিযুক্ত কিশোর সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসা করলে সে অসংলগ্ন আচরণ করে। এ অবস্থায় সঞ্জয়ের পিতা প্রদীপ চন্দ্র তাদের পরিত্যাক্ত বাড়ির পেছনের একটি গর্তে সিমিতের মরদেহ দেখিয়ে দেন।
আজ বুধবার ভোরবেলা সঞ্জয়ের পিতার দেখানো গর্ত থেকে পুলিশ সিমিতের লাশ উদ্ধার করে। আটক অভিযুক্ত সঞ্জয়ের দেয়া প্রাথমিক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সদর থানার ওসি-তদন্ত এম আর সাঈদ জানান, “অভিযুক্ত কিশোরের সাথে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়, এ নিয়ে সিমিতসহ অনেকেই ওই কিশোরকে খোঁচা দিত। গত রাতে সিমিত ওই কিশোরের সাথে এ নিয়ে আবারও খোঁচা দিলে সঞ্জয় ক্ষিপ্ত হয়ে সিমিতের গলা চেপে ধরে । পরে শ্বাসরোধ হয়ে শিশুটি মারা যায়”।
হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত কিশোরের বড় ভাই ও তার বাবাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) এম আর সাঈদ জানান। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রামের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।