ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ঃ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-১(ভূরুঙ্গামারী-নাগেশ্বরী) আসনে পাঁচজন প্রার্থী অংশ নিলেও প্রচারের মাঠে দুই প্রার্থী ছাড়া অন্যদের দেখা মিলছে না। জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী প্রচার প্রচারণা ব্যস্ত সময় পার করলেও অন্য তিন প্রার্থী দায়সারা ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে। নির্বাচনের মাত্র ৭ দিন বাকি থাকলেও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী মনিরুজ্জামান খানা ভাসানী (এক তারা প্রতীক ) এখনো নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শুরু করেননি।
কুড়িগ্রাম জেলার সর্ব উত্তরে ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা নাগেশ^রী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম-১ আসন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাগেশ্বরী উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩০ হাজার ৪২৯ এবং ভূরুঙ্গারী উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৩৪ জন। এই আসনে জাপা মনোনীত প্রার্থী একেএম মোস্তাাফিজুর রহমান মোস্তাাক (লাঙ্গল), জাকের পার্টির আব্দুল হাই মাস্টার (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের কাজী লতিফুল কবীর রাসেল (ফুলের মালা) ন্যাশনাল পিপলস পাটির্র নুর মোহাম্মদ ( আম) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টিও মনিরুজ্জামান খানা ভাসানী (এক তারা) সহ পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামীগের প্রার্থি দেয়া হলেও তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূরুঙ্গামারী ও নাগেশ^রী উপজেলা আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা একযোগে পথসভাসহ প্রচারণা চালিয়েছে। লাঙ্গল মার্কার প্রার্থি একেএম মোস্তাফিজুর রহমানকে বিজয়ী এবং ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে টানতে তারা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়েছে যাচ্ছে। জাকের পার্টি মনোনীত আব্দুল হাই গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে তিনিও নেতাকর্মিসহ প্রচারণা চালিয়েছেন। এই দুইজন প্রার্থি ছাড়া অবশিষ্ট প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারের কোন অফিস বা গণসংযোগ চোখে পড়েনি। অনেকে পোস্টারও লাগায়নি। অধিকাংশ ভোটার এসব প্রার্থিদের চেনেনা।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের আলাউদ্দিন, মফিজুল, পাথরডুবি ইউনিয়নের নুরু মিয়া ও আনিছ জানান, আমরাতো দুই জন প্রার্থিও মাইকিং শুনছি এবং তাদেরকে আমরা চিনি। কিন্তু অন্য প্রার্থি আমাদের এলাকায় কখনো আসেনি। তাদের আমরা চিনিনা।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী নুর মোহাম্মদ ( আম মার্কা) জানান, আমরা তো নতুন, তাই লোকে অতটা চেনে না। পরিচিত হতেই নির্বাচনে এসেছি। দুই উপজেলাতে পোস্টার লাগানো হয়েছে এবং মাইকিং করা হচ্ছে। তবে কোন জনসভা বা পথসভা করা হয়নি।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মনিরুজ্জামান খানা ভাসানী (এক তারা) জানান, ৬টি দল মিলে জোট করেছি। জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এখনো জোটের কোন সিদ্ধান্ত পাইনি। তাই নির্বাচনে প্রচার প্রচারণা শুরু করতে পারিনি।
এবিষয়ে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন মনোনীত প্রার্থী কাজী লতিফুল কবীর রাসেল (ফুলের মালা প্রতীক) এর সাথে একাধিকবার যোযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী (গোলাপ ফুল প্রতীক ) আব্দুল হাই জানান, প্রচারণা চালাতে গিয়ে একাধিক জায়গায় লাঙ্গল এর কর্মীদের বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি। শনিবার রাতে নাগেশ্বরীর হাছনাবাদ ইউপিতে আমার নির্বাচনী জনসভায় প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়েছে। তবে আমার জয়ের ব্যাপারে আমি অনেকটাই নিশ্চিত।
আওয়ামীলীগ- বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় প্রচার প্রচারণায় অনেকটা এগিয়ে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী (লাঙ্গল প্রতীক) ও সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কুড়িগ্রাম-১ আসনের লোকজন আমাকে ভোট দিয়ে ৪ বার এমপি বানিয়েছে। এবারও জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচীত করবে ইনশাআল্লাহ।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, এই আসনে ৫ জন প্রার্থী বিভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘঁনার খবর পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনে আমরা শতভাগ আশাবাদী।