তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম থেকে :
কুড়িগ্রামে গত দু’দিন সকাল থেকেই সূর্যের দেখা মেলায় জন জীবনে বেশ স্বস্তি ফিরে আসলেও মঙ্গলবার দিবা গত মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশা এবং কনকনে ঠান্ডায় মানুষজন চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। জেলায় বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তাপমাত্রা নিম্নগামী থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে চরাঞ্চলের শিশু ও বৃদ্ধরা। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
এ অঞ্চলের অসংখ্য ছিন্নমূল পরিবারের মানুষজন গরম কাপড়ের অভাবে নিদারুণ শীতকষ্টে রয়েছে। জীবিকার তাগিদে ছিন্নমূল পরিবারের অনেক কৃষিশ্রমিক ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হয়েও ঠান্ডায় টিকে থাকতে পার না পেরে ফিরে আসছে ঘরে। কনকনে ঠান্ডার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষি শ্রমিকসহ চরাঞ্চলের মানুষজন।
জেলার রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের কৃষক শাহাদত আলী জানান, জমিতে বোরো চাষের সময় হয়েছে কিন্তু কনকনে ঠান্ডার কারনে ক্ষেতে যেতে পারছি না। আজ কিছুক্ষণের জন্য খেতে গিয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে বোরো আবাদ বিলম্বিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করলেন তিনি।
একই উপজেলার কৃষি শ্রমিক সৈয়দ আলী জানান, রাতে কনকনে ঠান্ডায় খুব কষ্ট হয়। টাকার অভাবে গরম কাপড় কিনতে পারি নাই। এই ঠান্ডার কারনে সকালে যে কাজে বের হবো সে উপায়ও নাই । ঠান্ডা না যাওয়া পর্যন্ত খুব কষ্টে আছি।
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তুহিন জানান, গত চার দিন ধরে এ জেলায় মূদু শৈত প্রবাহ বিরাজ করছে। আজ (১১ জানুয়ারি) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে স্থানীয় অনেকেই ধারণা করছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছ,স্থানীয় সরকার যেমন পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ গুলোর মাধ্যমে এ পর্যন্ত সরকারী ভাবে জেলার ৯ উপজেলায় দরিদ্র মানুষের জন্য ৩৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, জেলায় ছিন্নমূল মানুষের তুলনায় ৩৮ হাজার কম্বল একে বাড়েই নগণ্য। তারা জরুরী ভিত্তিতে আরো কম্বল প্রদানের দাবি জানান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, আরো নতুন করে ২৫ হাজার কম্বল পাওয়া গেছে যা দ্রুত বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।