কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের চিলমারীর চর শাখাহাতি ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ নাহিদ হাসান ও নাওশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ রবিউল ইসলাম এর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহীদুল ইসলাম।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে জানা যায়, স্মারক নং- জেপ্রাশিঅ/বিঃমাঃ/চিল/কুড়ি/২৫৯৮ তারিখঃ ০৯/১২/২০১৯ইং তারিখে একটি অভিযোগ নামার মাধ্যমে জানা যায়, চর শাখাহাতি ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে চিলমারী শিক্ষা অফিস গত ২৪/০৯/২০১৯ ইং তারিখের উশিঅ/চিল/কুড়ি/৫০১ নং স্মারক পত্রের প্রতিবেদনে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করেন।প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকে অনুমতি ছাড়াই গত ০৪/০২/২০১৯ইং তারিখ ১দিন,২৬/০২/২০১৯ইং তারিখ ১দিন,২৩/০৩/২০১৯ তারিখ ১দিন,২৬/০৬/২০১৯ তারিখ হতে ২৯/০৬/২০১৯ইং পর্যন্ত ৪দিন,০৮/০৭/২০১৯ইং তারিখ ১দিন,০৩/০৮/২০১৯ইং তারিখ ১দিন সর্বমোট ০৯দিন বিদ্যালয়ে অনুমোদনহীন ভাবে অনুপস্থিত ছিলেন।এবং তার নৈমিত্তিক ছুটি গ্রহন করার প্রবনতা বেশী লক্ষ করা যায়।বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ব্যতিরেকে জোরপূর্বক নিজেই নৈমিত্তিক ছুটি লেখেন বা স্বাক্ষর করেন মর্মে প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে জানা যায়। উপজেলা শিক্ষা অফিসের দপ্তর স্মারক নং-উশিঅ/চিল/কুড়ি/৩৬৩, তারিখ ১১/০৬/২০১৯ইং তারিখ অনুযায়ী কৈফিয়ত তলব করা হলে,উক্ত কৈফিয়তের জবাব পাওয়া যায়নি।ওই শিক্ষক গত ১৭/০৪/২০১৯ইং তারিখে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অনুপস্থিতির উপর উপস্থিতি স্বাক্ষর করেন।গত ২৭/০৪/২০১৯ইং তারিখ হতে ২৯/০৪/২০১৯ ইং তারিখ পর্যন্ত নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করেন।পরবর্তীতে হাজিরা খাতায় নৈমিত্তিক ছুটি লেখার উপর উপস্থিতি স্বাক্ষর করেন।দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়ের শ্রেনী পাঠদান বিঘ্নিত সৃষ্টি হচ্ছে এবং কোমলমতী শিশুদের পড়ালেখার যথেষ্ট ক্ষতি সাধিত হচ্ছে এবং প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মানউন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা,২০১৮ এর ৩(খ) ধারা অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অপরদিকে একই উপজেলার নাওশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত স্মারক নং-জেপ্রাশিঅ/বিঃমাঃ/চিল/কুড়ি/২৪৯৬ তারিখঃ ২৮/১১/২০১৯ইং তারিখের একটি অভিযোগ নামার মাধ্যমে জানা যায়,চিলমারী শিক্ষা অফিস গত ২৫/০৯/২০১৯ ইং তারিখের উশিঅ/সদর/কুড়ি/৫০৬ নং স্মারক পত্রের প্রতিবেদনে জানা যায় ওই শিক্ষক কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই গত ০৯/০৯/২০১৯ ইং তারিখে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন।জুলাই ২০১৯ ও আগষ্ট ২০১৯ মাসের হাজিরা খাতা যাচাইকালে দেখা যায় গত ০৮/০৭/২০১৯ইং হতে ১০/০৭/২০১৯ পর্যন্ত ৩দিন, ১৪/০৭/২০১৯ইং হতে ২৯/০৭/২০১৯ইং পর্যন্ত ১৬দিন, গত ০১/০৮/২০১৯ইং হতে ০৩/০৮/২০১৯ইং পর্যন্ত ৩দিন,গত ২৯/০৮/২০১৯ইং হতে ৩১/০৮/২০১৯ইং পর্যন্ত ৩দিন,সর্বমোট ২৬দিন বিদ্যালয়ে অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত ছিলেন। গত ০৪/০৮/২০১৯ইং তারিখে ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা বাহিরে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক কারণ জানতে চাইলে উল্টো প্রধান শিক্ষককে গালিগালাজ ও আঘাত করা সহ জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে।সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ওই শিক্ষককে নিয়মিত বিদ্যালয়ে না আসার কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক রুকুনুজ্জামান এর সামনে ঔদ্ধোত্বপূর্ণ আচরণ করেন।এবং অভিযুক্ত ওই শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান না করে গ্রামে চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে অন্য নৌকায় বাড়ী ফেরেন।ওই শিক্ষক বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের সহিত জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসার লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়ের শ্রেনী পাঠদান বিঘ্নিত সৃষ্টি হচ্ছে এবং কোমলমতী শিশুদের পড়ালেখার যথেষ্ট ক্ষতি সাধিত হচ্ছে এবং প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মানউন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা,২০১৮ এর ৩(খ) ও ঘ ধারা অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সালেহ সরকার জানান, দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসার মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা আশা করি তা শীগ্রই বাস্তবায়ন হবে।
এ ব্যাপরে জেলা শিক্ষা অফিসার শহীদুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পর্যায়ে মামলা দায়ের করেছি। মামলাটি বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।