রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাও) সংবাদদাতা ঃ ঠাকুরগায়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের মেয়াদ অতিবাহিত হয়েছে প্রায় ৩ মাস তারপরও তারা চেয়ারম্যান এমন ঘটনায় হতবাক সচেতন মহল। সাধারন ভোটার সহ সহচেতনমহল’র প্রশ্ন কোন অজ্ঞাত কারনে তারা এখনও চেয়ারম্যান। এ নিয়ে ভোটারসহ সচেতন মহলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রয়া দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার যখন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত রাখার তাগিদে সমস্ত জটিলতা পিছনে রেখে ।সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ মাস আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন। ঠিক তখন রাণীশংকেল উপজেলার ৩নং হোসেনগাও, ৮নং নন্দুয়ার ও ৫নং বাচোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-সাধারন সদস্যদের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয়ে ৩মাস অতিবাহিত হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না ইউনিয়নগুলিতে।
তবে ঠাকুরগাও নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা যায় ওই ৩ ইউনিয়নের সাথে পৌরসভার সীমানা জটিলতা নিয়ে পৌরসভা নির্বাচন চলাকালীন সময়ে হাইকোর্টে রিট হয়। সে সময় হাইকোটের নিদের্শে পৌরসভার ভোট গ্রহণের কয়েকদিন আগে নির্বাচন স্থগিত আদেশ দেন মহামান্য হাইকোর্ট। এরপরে আবার হাইকোর্টের নির্দেশেই পূর্বের নির্ধারিত তারিখেই পৌরসভার ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে সীমানা জটিলতা থেকে যায়। সীমানা জটিলতাকে কেন্দ্র করে চুতুর ৩ চেয়ারম্যান হাইকোর্টে রিট করলে মহামান্য হাইকোর্ট রিট আদেশে নির্বাচন করতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন।
এছাড়াও রাণীশংকৈলের নির্বাচন অফিস ও ইউএনও খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান সীমানা জটিলতার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমানা পূর্ণর্বিন্যাস করে সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। এবং সীমানা পূর্ণর্বিন্যাসের এই বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের গেজেট হয়ে প্রকাশ হয়েছে ১০ নভেম্বর/২০১৬ইং তারিখে। এরপরে আবার ভোটার পূর্ণবিন্যাস করার জন্য অনুমতি পত্র চেয়ে ১৫ নভেম্বর/২০১৬ইং তারিখে সচিব নির্বাচন কমিশন ঢাকা বরাবরে পত্র দিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শুকুর মাহামুদ। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এই অনমুতি পত্রের কোন জবাব দিচ্ছেন না । এদিকে জানা যায়, এই চিঠি পেলেই নির্বাচন হতে আর কোন বাধা নেই।
এদিকে এই তিনটি ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বললে আবু, হোসেন, তালেব, মালেক, কুদ্দস সহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমাদের উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ভোটাররা আজ থেকে ৬মাস আগে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দ মত চেয়ারম্যান মেম্বার নির্বাচিত করেছেন। অথচ আমরা এ থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছি শুনেছি আমাদের ইউনিয়নে নাকি আরও ৫ বছর ভোট হবে না। আমরা ইউনিয়নে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি সময়-যত যাচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের আচরণ ততটাই বেপরোয়া হচ্ছে তারা আমাদের মূল্যয়ন করে না। এবার ঠান্ডার সময় আমরা কেউ শীত বস্ত্র পাইনি আমরা অবেহেলিত।
এ বিষয়ে কথা হয় তিন ইউপিতে নির্বাচন চাই আন্দোলনের অন্যতম উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার সাথে তিনি বলেন নির্বাচনের জন্য মিছিল করেছি স্মারকলিপি দিয়েছি। দাবী আমাদের একটাই জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত রাখার। কিন্তু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অশুভ শক্তির অসীম সাহসে এই ৩ ইউপির চেয়ারম্যানরা বহাল রয়েছেন। তিনি অনতিবিলম্বে ৩ ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে আ’লীগ মনোনীত ৮নং নন্দুয়ার ইউপির চেয়ারম্যান পদ-প্রত্যাশী আব্দুল বারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার কারনেই এবং তাদের ইশারায় এই তিনটি ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। হোসেনগাও ইউপির আ’লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম রব্বানী বলেন, নির্বাচন হতে আইনি কোন জটিলতা নেই নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা পূর্ণবিন্যাসের অনুমতি পত্রটা দিলেই ভোট অনুষ্ঠিত হয় কিন্তু একজন প্রভাবশালীর ইশারায় এই পত্র আটক রয়েছে।
জেলা নির্বাচন অফিসার শুকুর মাহমুদ বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য আমরা প্রস্তুত শুধু মাত্র নির্বাচন কমিশনারের অনুমতির অপেক্ষায় আমরা আছি। আমরা নির্বাচন কমিশন ঢাকার সাথে যোগাযোগ রেখেছি অনুমতি পত্র পেলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।