ফারহানা আক্তার, জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটে এবার নিন্মমানের ভেজাল বীজ আলুতে কৃষকের কপাল পোড়ার শঙ্কা রয়েছে। ভেজাল
বীজের কারনে কোনো জমিতে আলুর চারা গজায়নি, আবার কোনো জমিতে বীজ আলু থেকে চারা গজানোর পরে গোঁড়ায় বীজ আলু পঁচে যাচ্ছে। কৃষকেরা বলছেন, নিন্মমানের ভেজাল বীজ আলু ক্রয় করে প্রতারিত হয়েছেন। ভেজাল বীজ আলু জমিতে লাগানোর কারনে তারা এই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অনেক কৃষক আবার নষ্ট হওয়া ক্ষেতে নতুন করে সরিষাসহ অন্য ফসল রোপণ করেছে। এই চিত্র জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের বেশকিছু ফসলের মাঠের। তবে কৃষকদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেখভালের অভাবে বিভিন্ন দোকানে এসব ভেজাল বীজ আলু বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া সময় মতো কৃষি অফিসের
লোকজনদেরকেও পরামর্শের জন্য পাওয়া যায় না। কুয়াতপুর গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতলাল উপজেলার মাঁটিরঘর এলাকার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে আলু লাগানোর জন্য বারী-৮৬ নামের বীজ আলু ক্রয় করেন। ৬০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা বীজ আলুর দাম ২৬০০ টাকা। ১৪ বস্তা বীজ আলু কিনে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে রোপন করেছি। আলু লাগানোর পর অর্ধেক বীজ আলুর চারা গজায়নি। একারনে অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তিনি বলেন, প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে হালচাষ, সার, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকসহ সবমিলিয়ে ৬০/৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আলুর বীজ পঁচে যাওয়ায় খরচ উঠা নিয়ে শঙ্কায় আছি।আরেক কৃষক রস্তম মন্ডল বলেন, আমার ১৮/১৯ বিঘা জমির জন্য বারী-৮৬ আলুর বীজ কিনে রোপণ করেছি। ভেজাল বীজের কারনে আমার ১৮/১৯ বিঘা জমির ৭০℅ আলুর চারা গজায়নি। বাঁকি ৩০℅ চারা গজানোর মধ্যে আবার ২০% বীজের গাছ পঁচে গেছে। বাঁকি ১০% আলুর বীজের চারা টিকলেও এখন নতুন করে আবার অন্য বীজের চারা রোপন করছি। কৃষক মোজাফফর হোসেন বলেন, শুধু আমার নয়, আমাদের গ্রামেই অন্তত অর্ধশতাধিক জমির বীজ আলু নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা
কৃষকেরা প্রতারিত হয়েছি। একই জমিতে দুইবার আলুর বীজ রোপণ করেছি। আমাদের কৃষকের ফসলের ক্ষতি হলেও আমাদের ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কৃষি উপ-সহকারী কোনোদিন আমাদের সঙ্গে দেখা করেনি কিংবা কোনো পরামর্শ পাইনা। কৃষকদের দূঃসময়ে কৃষি অফিস পাশে থাকলে আমরা উপকৃত হতাম।পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.লুৎফর রহমান বলেন, এবছর উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আলু লাগিয়েছে কৃষকেরা। বর্তমানে যে আবহাওয়া চলছে এতে করে এখন পর্যন্ত সব ফসলের জন্য
উপকারীতা। এছাড়া ভেজাল আলুর বীজের বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব আমার না। তবে কোনো কৃষক যদি প্রমাণসহ অভিযোগ করে তাহলে বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবগত করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *