এস.এম হোসাইন আছাদ, জামালপুর ॥
জামালপুর সদর উপজেলায় সোহাগ শেখ (১৮) নামের এক ইজিবাইক চালকের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। ২৭ মার্চ শুক্রবার সকালে উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের দোয়ানিপাড়া গ্রাম থেকে এ মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সোহাগ ওই গ্রামের মৃত নুরুল শেখের ছেলে। প্রতিবেশী এক মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে মারপিট করে গাছে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাকে হত্যা করা হয় বলে তার মা দাবি করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ইজিবাইক চালক সোহাগ শেখ সদরের মেষ্টা ইউনিয়নের দোয়ানিপাড়া গ্রামে তার নানাবাড়িতে থাকতেন। প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম শ্যামলের মেয়ে উর্মি খাতুনকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরে ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর দু’দফায় ওই মেয়ে পক্ষের প্রায় ১৫/২০ জন সোহাগ শেখের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারপিট করলে গুরুতর আহত হন তিনি। ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনার বিচার চাইতে মা কাঞ্চন বেগম কয়েকজন প্রতিবেশীকে নিয়ে মেষ্টা ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে অভিযোগ করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে বাড়ি ফিরে তারা জানতে পারেন সোহাগ শেখ বাড়ির পেছনের একটি জাম গাছের ডালের সাথে ফাঁসিতে ঝুলছে। পরিবারের সদস্যরা রাতেই তাকে মৃত অবস্থায় গাছ থেকে নামিয়ে পুলিশে খবর দেন।
এদিকে শুক্রবার সকালে স্থানীয় নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল লতিফ মিয়া পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সুরতহাল নির্ণয় শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে হামলাকারী রফিকুল ইসলাম শ্যামল ও তার পরিবারের সদস্যরা গাঁ ঢাকা দিয়েছে, বাড়িটি একদম ফাকা লক্ষ্য করা গেছে।
মৃত সোহাগের মা কাঞ্চন বেগমের অভিযোগ, রফিকুল ইসলাম শ্যামলের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কারণেই তার ছেলেকে মারপিট করে গাছে ঝুলিয়ে রেখে ঘটনা ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমার বাড়িতে হামলাকারীরা সবাই প্রভাবশালী। তিনি নিরাপত্তাসহ এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে মেষ্টা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নাজমুল হক বাবু সোহাগ শেখকে দুই দফায় মারার ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, প্রথম দফায় সোহাগ শেখকে মারপিটের ঘটনাটি সোহাগের মা কাঞ্চন বেওয়া আমাকে অবগত করে। আবারও সোহাগ শেখের উপর দ্বিতীয় দফায় হামলা চালিয়েছিলো বলে জেনেছি। আমি বিষয়টা মিমাংশার আশ্বাস দিয়েছিলাম। পরে আমি সোহাগ শেখের মৃত্যুর খবর পাই। পুলিশ এসেছে বিষয়টি তারাই তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
নারায়ণপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, সোহাগ শেখের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে নানান কথা শোনা যাচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।