কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।

অবশেষে দীর্ঘদিন পর কুড়িগ্রাম জেলা জাসদের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
হতে যাচ্ছু। শুক্রবার শেখ রাসেল পৌর অডিটরিয়ামে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থেকে দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি।
সম্মেলনকে ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেলেও দু’টি গ্রুপের বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সম্মেলনকে ঘিরে দীর্ঘদিন থেকে বঞ্চিত একটি গ্রুপ এবং নতুন আহবায়ক কমিটির সাথে রাজাকার পরিবারের সন্তানরা একটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। জেলা জাসদের নেতা কর্মীদের দেখে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দুটি গ্রুপে বিভক্ত। করোনাভাইরাস এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে জেলা জাসদের কমিটি ভেঙে দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক
কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরপরই যুগ্ম আহবায়ক সহ ৩ জন
পদত্যাগ করেন।

দীর্ঘদিন থেকে পরিক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আহবায়ক কমিটিতে নিয়ে আসা অপেক্ষাকৃত কম গ্রহণযোগ্য নেতা কর্মীদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পরপরই যুগ্ম আহ্বায়কসহ কমিটির অনেকেই পদ পদবী থেকে পদত্যাগ করেন যা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দীর্ঘদিন পর আবারো সেই
বিতর্কিত নেতা-কর্মীদের দিয়ে সম্মেলন করায় বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে জেলা জাসদে।

দীর্ঘদিনের জাসদের নেতৃত্বে থাকা জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দরা সম্মেলন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। ত্যাগী নেতাকর্মীদের এই বয়কটের ঘোষণার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে জেলা জাসদের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার সলিমুল্লাহ সম্মেলন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।

জেলা জাসদের সম্মেলনকে ঘিরে এই দ্বিধাবিভক্তির কারণ অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

কুড়িগ্রাম জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চিলমারীর কুখ্যাত রাজাকার পঞ্চু মিয়ার পুত্র হাবিবুর রহমান বিদ্যুৎ। জানাগেছে, ১১ নং সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহেরের আদেশে
চিলমারীর কুখ্যাত রাজাকার পঞ্চু মিয়াকে মৃত্যুদন্ড কার্যকরী হয়। সেইসময় পঞ্চু মিয়ার এই মৃত্যুদন্ড কার্যকরের খবরটি ১৯৭১ সালের ২২ অক্টোবর অগ্রদূত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

এছাড়াও কেন্দ্রীয় কাউন্সিল থেকে বের হয়ে কিছু নেতা নামসর্বস্ব দল বাজাসদ (প্রধান- আম্বিয়া) গঠন করলে রাজাকার পুত্র হাবিবুর রহমান বিদ্যুৎ বাজাসদ কুড়িগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক হন। বিগত ২৩ ফেব্রুয়ারী কুড়িগ্রাম জেলা জাসদের কাউন্সিল-কে কেন্দ্র করে বাজাসদ জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে কুড়িগ্রাম জেলা জাসদে যোগদান করে এখন সাধারণ সম্পাদক হতে নানা ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছেন।

এতে করে কুড়িগ্রাম জেলা জাসদের দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

উল্লেখ্য, কুখ্যাত রাজাকার পঞ্চু মিয়ার আরেক পুত্র হামিদুল (বিদ্যুৎ এর ভাই) ছিলেন ২ জন মুক্তিযোদ্ধার হত্যাকারী। মামলায় তাকে জেলেও যেতে হয়েছে , কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পরে হামিদুল জেল থেকে বেরিয়ে আসে।

কুড়িগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের গবেষনা এবং দলিল ছাড়াও ১১ নম্বর সেক্টর এর সাব সেক্টর কমান্ডার জনাব সফিক উল্লাহর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এসব বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন