ফারুক আহমেদ,কলকাতা থেকেঃ
দেখতে দেখতে ১ বছর পেরিয়ে গেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কালসীমা। গত বছর ১৭ নভেম্বর চীনের উহান প্রদেশে এই সংক্রমণের খবর প্রথম মেলে। তারপর তীব্র গতিতে তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। ভারতও এর থেকে বাদ যায়নি। যার জেরে সারা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪০৪ জন। ভারতে মারা পড়েছেন, ১ লক্ষ ৩২ হাজার ১৬২ জন। আক্রান্ত প্রায় ৯০ লক্ষ। তবে আশার কথা এই মুহূর্তে এই রোগে মৃত্যুর হার কিছুটা হলেও কমের দিকে। তবে ইউরোপে এই রোগের দ্বিতীয় ঢেউ আবার চিন্তায় ফেলেছে বিশ্ববাসীকে। এই মাহামারির এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কার না হওয়ার ফলে চিরাচরিত ওষুধের ওপরেই নির্ভর করে এর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন বিশ্বের প্রতিটি দেশের চিকিৎসকরা। করোনা বা কোভিড ১৯ এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রথম পাঠ হল সচেতনতা। আর এই সচেতনতা বাড়াতে ও মানুষকে এই রোগ সম্পর্কে সজাগ করতে এগিয়ে এসেছেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য বিজ্ঞানী ড. গৌতম পাল। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ড. গৌতম পালের লেখা ‘কোভিড-১৯ ও জনস্বাস্থ্য’ নামক একটি গবেষণা বইয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, এসএসকেএম হাসপাতালের প্রফেসর ও ফিজিওলজি বিভাগের প্রধান ডাক্তার অর্ণব সেনগুপ্ত, কল্যাণীর গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার সুশীল চন্দ্র বিশ্বাস, হোমিওপ্যাথীর বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাক্তার ডি. এন বন্দ্যোপাধ্যায়, ও বইটির প্রকাশক অরবিন্দ দাসগুপ্ত ও উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনের সম্পাদক ফারুক আহমেদ। উপস্থিত সকলেই একবাক্যে এই করোনা প্রেক্ষিতে বইটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এই বইটির মাধ্যমে লেখক সহজ সরল ভাষায় কোভিড-১৯ রোগটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা, প্রতিরোধ, প্রতিষেধকের পাশাপাশি কিভাবে সাধারণ মানুষ এই রোগের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন তা সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞান সাধনার পাশাপাশি সমাজ সচেতনতার যে গুরু দায়িত্ব প্রফেসর ড. গৌতম পাল নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তারই উজ্জ্বল নিদর্শন এই ‘কোভিড-১৯ ও জনস্বাস্থ্য’ গ্রন্থটি। শুধু তাই নয় প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণনা করা রোগটি সম্পর্কে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা ছাত্রছাত্রীদের অবশ্যই পাঠযোগ্য বলে মনে করেন উপস্থিত চিকিৎসকরা।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য গৌতম পাল এদিন বললেন, “কোভিড-১৯ একটি অভূতপূর্ব মহামারী (প্যানডেমিক) ব্যাধি। অত্যন্ত সংক্রামক হওয়ায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ ব্যাধিটি গােটা বিশ্বে সংক্রামিত হয়েছে। এছাড়া ব্যাধিটি প্রাণঘাতী হওয়ায় এবং নিরাময়ে নির্দিষ্ট কোনাে প্রতিষেধক বা টীকা বিদ্যমান না থাকায় ইতােমধ্যে এই ব্যাধিতে বহু মানুষের প্রাণনাশ ঘটেছে। আশার কথা, খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ নিরাময়ের টীকা (ভ্যাকসিন) চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রচলিত হবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

নিবারণ যে কোনাে ব্যাধির নিরাময়ের শ্রেষ্ঠ পন্থা এই প্রবচনটি আমরা প্রায় সকলেই জানি। কোভিড-১৯ ব্যাধিটিকে নিবারণ করার জন্য ব্যাধিটির কারণ ও সংক্রমণের কৌশল সর্বাগ্রে জানা দরকার। এই বইটি কোভিড-১৯ ব্যাধিটির রােগতত্ত্ব ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনচর্যা সম্বন্ধে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে কোভিড-১৯ ব্যাধিটিকে নিবারণ করতে সাহায্য করবে। বইটির মাধ্যমে আমি আমার সামাজিক দায়বদ্ধতার ঋণ কিছুটা পরিশােধ করার চেষ্টা করেছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন