বিশেষ প্রতিনিধি:
বান্দরবান জেলা বিএনপির আংশিক নতুন কমিটি ঘোষণার পর বিএনপি, ছাত্রদল ও মহিলা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দ গণহারে পদত্যাগপত্র জমা দিতে শুরু করেছে।জানা যায়,মাম্যাচিং কে সভাপতি ও মো. জাবেদ রেজাকে সাধারণ সম্পাদক করে বৃহস্পতিবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দফতর সম্পাদক মো.তাইফুল ইসলাম টিপুর স্বাক্ষরিত বান্দরবান জেলা বিএনপির আংশিক কমিটির একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। জেলা কমিটির আংশিক কমিটি গঠনের সংবাদ শুক্রবার বান্দরবান জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে এই গণপদত্যাগের ঘটনা ঘটে। সদ্য ঘোষিত বান্দরবান জেলা বিএনপির কমিটির প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন বান্দরবান জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী কাজী নিলু তাজ বেগম ও সাধারণ সম্পাদিকা উম্মেকুলছুম সুলতানা লিনা। এছাড়াও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বান্দরবান জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক দৌলতুল কবির খাঁন ছিদ্দিকী,নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নুর মোহাম্মদ, লামা উপজেলা ছাত্রদল নেতা বাবু অং মার্মা
পদত্যাগকারী বান্দরবান জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা উম্মে কুলছুম সুলতানা লিনা জানান, বান্দরবান জেলা বিএনপির নতুন কমিটির প্রতি আমাদের অনেক আশা ও আগ্রহ ছিল। কিন্তু বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি জন বিচ্ছিন্ন, আওয়ামী লীগের সাথে আতাতকারী ও দুর্নীতিবাজ দুজনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন দিয়ে বান্দরবানের মাটিতে বিএনপির কবর রচনা করেছে। এসব জন বিচ্ছিন্ন, আওয়ামী লীগের সাথে আতাতকারী ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের পেছনে রাজনীতি না করে ঘরে বসে থাকা অনেক ভাল।
বান্দরবান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কুদ্দুছ জানান, মাম্যাচিং ও মোঃ জাবেদ রেজার নেতৃত্বে বান্দরবানে কখনো বিএনপির রাজনীতি সম্ভব নয়। বিএনপির এই ক্রান্তিকালে মাম্যাচিং ও মোঃ জাবেদ রেজা আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলাসহ নির্যাতন করেছে। তাদের পেছনে কোন নেতাকর্মী নেই এবং তারা দুজনই দুর্নীতিবাজ। বিএনপির সুখে দুঃখে এতদিন পর্যন্ত মাঠে ও ঘরে যারা ছিল সেই সব ত্যাগী এবং জনবান্ধব নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপির দুশমনদের হাতে সংগঠনের নেতৃত্ব তুলে দেয়া হয়েছে। এই কমিটি একজন নেতাকর্মীও মেনে নেয়নি। তিনি আরো জানান, বান্দরবান জেলায় মাম্যাচিং ও মো. জাবেদ রেজার নেতৃত্বে কখনো বিএনপির রাজনীতি সম্ভব নয়। তাই দলে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি না করে দলের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছায় সংগঠন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে। আমিসহ যারা দুরদিনে উপজেলা চেয়াম্যান দল থেকে নির্বাচিত আলীকদম উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম, লামা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা বিএনপি‘র সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ কামাল উদ্দিন (ভারপ্রাপ্ত) পদত্যাগের প্রস্তুতি চলছে। রাতে এই বিষয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত বৈঠকে সকল পদের নেতাকর্মীরা একযোগে শনিবারে মধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।
বান্দরবান জেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাবেদ রেজা বলেন, নতুন কমিটি ঘোষণা করার পর গুটি কয়েক নেতা পদত্যাগের বিষয়টি দুঃখজনক। দীর্ঘ দিন দলে বিভাজন থাকলেও এখন আমি ও সভাপতি মাম্যাচিং সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজনীতি করতে চাই। আমি অতীতের সকল ভেদাভেদ ও রাগ ক্ষোভ ভুলে গেছি। আমি একজন নেতাকর্মীকেও বাইরে রেখে রাজনীতি করবো না। আমি মনে করি দলের এই দুঃসময়ে অতীতের সব কিছু ভুলে গিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করতে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পতাকাতলে আবদ্ধ হওয়া দরকার।