নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিএমডিএ) গোদাগাড়ী জোন-১ এর পরিদর্শক মোতাহার আলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি উপজেলার কাগঠিয়া স্কীমভূক্ত গভীর নলকূপের অপারেটর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। সেই পদে অন্য এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকার মাধ্যমে নিয়োগ দিচ্ছিন পরিদর্শক মোতাহার আলী। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা অগ্রীম নিয়েছেন তিনি।
প্রত্যক্ষদোষী আলেয়ারা খাতুন বলেন, নইমুদ্দিনের ছেলে সোলেমানকে ৫০ হাজার টাকা চুক্তির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া করে বলে ইতোমধ্যে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন পরিদর্শক মোতাহার। উক্ত লেনদেন চুক্তি হয় নাইমুল ইসলাম মাধ্যমে সহড়াপাড়া স্কীমের গভীর নলকূপের অপারেটর ইউসুফ আলী সাথে৷ ইউসুফ আলী সে অনুযায়ী মোতাহারকে টাকা প্রদান করেন। মুলত সোলেমানকে কাগঠিয়া স্কীমভূক্ত ডীপ টিউবওয়েলের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চুক্তিতে এই টাকা লেনদেন হয়।
আলেয়ারা আরও বলেন, আমি উক্ত অবৈধ লেনদেনের প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু পরিদর্শক মোতাহার আলী বলেছেন আমি কাকে অপারেটর নিয়োগ দিবো আর দিবো না সেটা আমার একান্ত ব্যাপার। পরে সেখান থেকে তিনি চলে আসেন।
জানতে চাইলে মোতাহার আলী বলেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। আমরা এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে মোয়াজ্জেম এর নিকট থেকে চাবি জব্দ করেছি।আমি কোন টাকা নেইনি।
সাবেক অপারেটর মোজাম্মেল হোসেন জানান,আমি দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত কাগঠিয়া স্কীমে ডিপের অপারেটর হিসেবে কাজ করছি। কিন্তু বরেন্দ্রের পরিদর্শক মোতাহার টাকার প্রলোভনে পরে আমাকে চাকুরীচ্যুতির পায়তারা করছে। আমার স্কীমে স্কীমভূক্ত জমির পরিমান ১৫৫ বিঘা। কিন্ত এই স্কীমে জমি চাষ হয় ৩২০ বিঘা।এর মধ্যে ৫/৬ জন কৃষক মোতাহারের সাথে মিশে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার পক্ষে ৮১ জন স্কীমভূক্ত কৃষক আছে এবং তাদের জমির পরিমান ৩১১ বিঘা। বাকি ৮/৯ বিঘা জমির মালিকরা আমার বিপক্ষে কাজ করছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে এমনটি করছেন বলে জানান ভুক্তভোগী মোজাম্মেল।
তিনি বলেন, আমার ১৮ বছরের অপারেটর জীবনীতে কখনো কৃষকদের সাথে আমার তর্ক হয়নি অথচ হাতেগোনা কয়েকজন কৃষকের পক্ষপাতিত্ব করছেন বরেন্দ্র অফিস।
কাগঠিয়া স্কীমের কৃষক ফারুক হোসেন (৬২) বলেন, আমরা কখনো মোজাম্মেলের খারাপ ব্যবহার দেখিনি।মোজাম্মেল সবার সাথে মিলেমিশেই পানি সরবরাহ করে। সবার সাথে কাজ করতে গিয়ে হয়ত দুয়েকজনের মন যোগাতে পারে না। তাই বলে লোকটার হাত থেকে চাবি কেড়ে নেওয়া ঠিক হয়নি।
সায়েদ আলী (৬৫) বলেন, মোজাম্মেল ভাল লোক। তার মত করে কেউ পানি বন্টন করতে পারবে না। তাকে বাদ দেওয়া ঠিক হয়নি।
গোদাগাড়ী জোন-১ এর সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, মোজাম্মেলকে রাখতে হবে এমন কোন কথা আছে?একটা অপারেটর নিয়ে এতো ভাববার সময় নেই। যা খুশি লিখেন। মোতাহার যে টাকা নিয়েছে তার কি প্রমাণ আছে? বলে তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে কটুক্তি করেন। বিএমডিএ এখন সাংবাদিকে গুনে না।
উল্লেখ্য, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলামের ওপর হামলা চালানো হয়েছিলো বিএমডিএ রাজশাহীর প্রধান কার্যালয়ে। সেই ঘটনায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়। চলতি বছরে ৫ সেপ্টেম্বর রাতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উল্লেখসহ নাম না জানা আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন সাংবাদিক বুলবুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন