মোহাম্মাদ মানিক হোসেন চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর-খানসামার দু-উপজেলার নদ-নদী খাল-বিলে ভরা মৌসুমে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। খরা মৌসুমে নদী গুলো শুকিয়ে যাওয়া, নদী ভরাট করে চাষাবাদ করা, সারা বছর নদীর ছোট খাটো খাল-বিলে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনসহ নদীর উপরে আবাদী জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করায় বর্তমানে ভরা নদীতে দেশী মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে তেমন দেখা মেলেনা কাঙ্কিত দেশী প্রজাতির মাছ। ফলে আমিষের অভাব দেখা দিয়েছে এলাকায় । অপর দিকে ভরা নদী গুলোতে কোন প্রকার মাছ না থাকায় হাত -পা গুটিয়ে বসে আছে দু-উপজেলার জেলে পরিবার। এতে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে খানসামার কাচিনীয়া জেলে পাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবারের মধ্যে কথা হয়, পতিত দাস , গিরিস দাস, রমেস,বিনোদ, হরিপদ চিরিরবন্দর উপজেলার ডাঙ্গার হাটের হরিশ,দেবেশ,নরেশ, সাতনালা গ্রামের মতিয়ার,মুকুল,ফিরোজসহ অনেকেই জানান, ভরা নদী বেলান,ইছামতি,আত্রাই সহ ছোট খাটো নদী গুলোতে কোন প্রকার মাছ না থাকায় তারা জাল ,পলই, ফান্দী, ডারকি,ভোরং, বর্কসা, চিপ, ডেরকি, জোলগা গুলো কোন কাজে আসছে না। ফলে মাছ ধরতে না পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে জেলেরা মাছ ধরা পেশা ছেড়ে অনেকে রিক্সা ,ভ্যান গাড়ি ,দিন-মজুরি করে কোন রকমে দিন যাপন করছে। তাই এলাকার জেলে পরিবারের দীর্ঘ দিনের দাবী এই নদী গুলোকে খনন করে সারা বছর পানি রাখার সু-ব্যবস্থা এবং কি কোথাও কোথাও মাছের অভয় আশ্রায় ব্যবস্থা করলে ভরা মৌসুমে নদ-নদী গুলোতে দেশী মাছে ভরে যেত। স্কুল শিক্ষক দয়াল রায় জানান, দেশী প্রজাতির মাছকে বাচাঁতে নদ-নদীর খাল বিল খনন করে মাছের অভায় আশ্রায় তৈরী করে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের মাধ্যমে পোনা মাছ বাচাঁতে সবাইকে উৎসাহিত করে বেশী বেশী পোনা মাছ অবমুক্ত করলে দেশী প্রজাতির মাছের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর মৎস্য কর্মকর্তা মোছা: কামরুন নাহার জানান, আমরা নদীতে পোনা অবমুক্ত কর্মসূচি আগষ্ট মাসে করে থাকি । দেশী মাছের আকালের কারণ হিসাবে কীটনাশকের অবাধ ব্যবহার মাছের অভয়াশ্রমগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়া। তবে এলাকার মানুষ সচেতন হলে আবার দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *