বিশেষ প্রতিবেদকঃ
ভুরুঙ্গামারীতে বাক প্রতিবন্ধী লীলিমা রানীর ভাগ্যে কবে জুটবে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড? মেধাবী ছাত্রীর লেখাপড়ার খরচ জোগোতে সমাজের বিত্তশালীদের নিকট সহায়তা কামনা পরিবারটি।
ভুরুঙ্গামারীতে সংখ্যালঘু পরিবারে জন্ম নেয়া বাক প্রতিপ্রতিবন্ধী কিশোরী নীলিমা রানী(১২)’র ভাগ্যে আজও জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া এই কিশোরী মেধাবী সত্বেও যেকোন মুহুর্তে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী।
জানাগেছে,উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর বলদিয়া হিন্দু পাড়ার দিনমজুর শ্রী নিশিকান্ত রায়ের বড় মেয়ে নীলিমা রানী। জন্মগত বাক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও মেধাবী। সে বর্তমানে বলদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রী। তার মেধার পরিচয় পাওয়া যায় তার বইয়ের কভারের হাতের লেখা দেখেই। নিশি কান্ত রায় (৩৫)অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে অতি কষ্টে সংসার চালালেও কন্যার কথা ভেবে অনেক কবিরাজী চিকিৎসা করেও কোন সুফল না পাওয়ায় বাক প্রতিবন্ধী কন্যাকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। নীলিমার মা শ্রী মতি সুমিত্রা রানী (৩০) কন্যার ভবিষ্যত চিন্তায় অস্থির,কিভাবে এই কন্যার ভরণপোষন করবে অভাবী সংসার দিয়ে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। অভাব এমন ভাবে গ্রাস করছে যে,এনজিও সংস্থাগুলো প্রলোভন দেখিয়ে ঋণ দিয়ে চড়া সুদে কিস্তি আদায় করে ঋণ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বেচে থাকার জন্য ন্যায্য অধিকার টুকুও হারিয়ে ফেলেছে অভাবের তাড়নায়। অভাবের কারনে এই বাকপ্রতিবন্ধী মেধাবী নীলিমার লেখাপড়ার প্রতি ঠিকমত নজর দিতে পারছেনা তার পিতামাতা। অথচ লেখাপড়ার প্রচন্ড ঝোক এই বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরী নীলিমা রানীর। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান,নীলিমা মুখে কথা বলতে না পারলেও ইশারা ইঙ্গিতে পড়ে মুখস্থ করে শিক্ষকদের কাছে লিখে দিয়ে প্রমান করে তার পড়া হয়েছে কিনা। সৃষ্টিকর্তা তার বাক শক্তি কেড়ে নিলেও জ্ঞানের নয়ন খুলে দিয়েছে এছাড়া ছবি আকতেও সে অত্যন্ত পটু। অভাবের তাড়নায় কখন তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় আশংকা তাদের। তার মা সুমিত্রা রানী জানান দেশে প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারী অনেক সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও মেয়ের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা বা অনুদান আজ পর্যন্ত তারা পায়নি । ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিকট অনেকবার ধর্না দিয়েও সুফল পায়নি তারা। অভাবের তাড়নায় যেকোন মুহুর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে মেধাবী নীলিমার লেখাপড়া। মেধাবী নীলিমার ভবিষ্যত গড়তে লেখাপড়ার বিকল্প নাই,হয়তো লেখা পড়া করে ভবিষ্যতে মানুষ হতে পারলে পরিবারের বোঝা না হয়ে নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে । এছাড়া পরিবারের বোঝা হয়ে যেন তাকে সারাজীবন থাকতে না হয় এই প্রত্যাশা করে এলাকার সুধী মহল। নীলিমার লেখাপড়ার খরচ যোগাতে অনতি বিলম্বে সরকারী প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহ সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহবান করেছেন এই অসহায় পরিবারটি।