ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা ঃ
ভুরুঙ্গামারীতে হাইকোর্টের স্থিতি অবস্থার আদেশ অমান্য করে ভরতের ছড়ায় বাঁধা প্রদান ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ১৭ জনকে কারন দর্শাও নোটিশ প্রদান করেছে আদালত।
জানাগেছে, কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ভরতের ছড়া ও ছিটপাইকের ছড়া মৌজার জনৈক ফজর আলী গংদের স্বত্বদখলিয় জমির মধ্যে ৩০.০৮ একর জমি জনৈক সিরাজুল হক গংকে সরকার লিজ প্রদান করেন। লিজ গ্রহনের পর ভুমির মালিক ফজর আলী গং যাতে কোন প্রকার বাঁধা বিঘœ সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য ফজর আলী সহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে ভুরুঙ্গামারী সহকারী জজ আদালতে ৫৩/২০০৯ নং অন্য মোকদ্দমা দায়ের করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত হয়। উক্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে ফজর আলী গং কুড়িগ্রাম জজ আদালতে ৪১/২০০৯ নং মিস আপিল এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে ১১৩৯/২০১০ নং সিভিল রিভিশন দায়ের করলে মহামান্য আদালত মোকদ্দমা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নালিশী সম্পত্তির দখল এবং অবস্থানের বিষয়ে উভয় পক্ষকে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। এ অবস্থায় ফজর আলী গং তাদের দখলে থাকা সম্পত্তি ভোগ দখল করা অবস্থায় মহামান্য হাইকোর্টের উপরোক্ত আদেশ থাকা সত্বেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুরুঙ্গামারী বিগত ১১.০৩.১৪ ইং তারিখের স্মারক মুলে ফজর আলী গংদের থাকা দখলীয় সম্পত্তি ইজারা গ্রহিতাদের নিকট ছাড়িয়ে দেবার নির্দেশ প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উক্ত নির্দেশের প্রেক্ষিতে ফজর আলীর পক্ষে মোস্তফিজুর রহান , উপসচিব ভুমি মন্ত্রলয়, জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে ২৭২/২০১৪ নং আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ গত ০৮/০৪/২০১৪ ইং তারিখে আদালতের আদেশ অমান্য ও অবজ্ঞা করার জন্য কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবেনা মর্মে রুলনিশি জারী করেন। উল্লেখিত আদালতের আদেশ বহাল থাকা অবস্থায় জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রাম পুনরায় ইজারা প্রদানের উদ্যোগ নিলে মোস্তাফিজুর রহমান জেলা প্রশাসকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে নিষেজ্ঞার প্রার্থনা করলে মহামান্য আদালত ১০/৮/২০১৭ তারিখে নালিশী সম্পত্তিতে ৩ মাসের জন্য এবং পরবর্তীতে স্থিতি অবস্থা আরো ৬ মাস বর্ধিত করেন।
এদিকে ৫৩/২০০৯ নং মোকদ্দমার ১নং বাদী মোঃ সিরাজুল হক একটি দরখাস্ত দাখিল করে মামলাটি উত্তোলনের আবেদন করলে বি-সহকারী জজ ভুরুঙ্গামারী তা মঞ্জুর করেন। উক্ত মঞ্জুর আদেশের প্রেক্ষিতে ফজর আলী গং হাইকোর্ট বিভাগে সিভিল রিভিশন নং ৪৪৩৩/২০১৭ দায়ের করলে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ গত ১৪/১২/ ২০১৭ তারিখের আদেশ মুলে ৫৩/২০০৯ নং মোকদ্দমা উত্তোলনের আদেশ কেন রদ করা হবেনা এই মর্মে সিরাজুল হক, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে কারন দর্শানোর রুল জারী করেন। অপরদিকে এ ঘটনার পরও বঙ্গসোনাহাট উপসহকারী ভুমি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ২০ জনকে আসামী করে গত ৫ জানুয়ারী ফজল গংদের বিরুদ্ধে ভুরুঙ্গামারী থানায় ৩/১৮ নং মামলা দায়ের করেছে।
এব্যাপারে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শংকর কুমার বিশ্বাস জানান,স্থিতি অবস্থা মানে কোন পক্ষ সেখানে যাবেনা। কিন্তু বিবাদী পক্ষ চুরি করে মাছ ধরায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিবাদী পক্ষের এডঃ জাহিদুল বারী জানান, আদালতের আদেশের ভুল ব্যাখ্যা করে বাদী পক্ষ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে। তিনি জানান, এ ব্যাপারে আরো একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।