মোঃ আবু হাসান,,,,বিভাগীয় প্রতিনিধি,,খুলনা,
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে যাত্রীবাহি খেয়া ট্রলার ডুবে নারী শিশুসহ কমপক্ষে ৫০ জন হতাহত হয়েছেন। ঘটনার পর উদ্ধারকারীরা দল ৪ নারীর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় গুরুতর আহত নারী-পুরুষসহ কমপক্ষে ৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়া ৫ শিশুসহ নিখোঁজ রয়েছেন অনন্ত: ১৮ জন। মঙ্গলবার বেলা ১০টার দিকে পানগুছি নদীতে যাত্রীবাহি খেয়া ট্রলার ডুবে গেলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিখোঁজদের উদ্ধারে নৌ বাহিনীর ডুবুরি দল, ফায়ার সার্ভিস, কোষ্টগার্ড, রেড ক্রিসেন্ট, থানা পুলিশসহ স্থানীয়রা কাজ করছেন। এদিকে খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক কুমার বিশ্বাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি ঘটনার কারন খুঁেজ বের করতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোমিনুর রশিদকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
স্থানীয় লোকজন ও আহত যাত্রীরা জানান, ঘটনার সময় নৌবাহিনীর একটি জাহাজ (পি-৩১২) দ্রুতগতিতে চালিয়ে গেলে এর তুফানে ট্রলারটি উল্টে যায়। ট্রলারে কমপক্ষে দেড়শ’ যাত্রী ছিল। তবে অপর কয়েকটি সুত্রের ধারণা, ট্রলারে ৭০ থেকে ৮০ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, গুয়াবাড়িয়া গ্রামের হাসেম হাওলাদারের স্ত্রী পিয়ারা বানু (৫০), উত্তর ফুলহাতা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী নাদিরা বেগম (২০), চিংড়াখালী গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৭৫) ও তার মেয়ে কালিকাবাড়ি গ্রামের মহসিন হোসেনের স্ত্রী বিউটি বেগম (৩৮)। অপরদিকে আশংকাজনক অবস্থায় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেবেকা খাতুন (৪৮), খাদিজা বেগম (৪০), সাবেক পুলিশ সদস্য শাজাহান তালুকদার (৬৫) ও আবুল খায়ের খোকাকে (৫৫) উদ্ধার করে খুলনায় স্থানান্তর করা হয়েছে। মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ফুলহাতা গ্রামের নাসিমা বেগম (৩০) ও তার ২ বছরের শিশুপূত্র। এ ঘটনার খবর পেয়ে মোংলাগামী নৌবাহিনীর ওই জাহাজটি কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে ফিরে আসে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল আলম, ফায়ার সাভিসের মোরেলগঞ্জ স্টেশন কর্মকর্তা হায়দার আলী ও উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের নিকট থেকে পাওয়া তথ্যমতে, নাজমুল (৭), রাহাত (১০), আনছার হাওলাদার (৩৮), পরিবার পরিকল্পনা অফিসের অফিস সহায়ক রফিক (৩৫), মোশারেফ হাওলাদার (৫০), সুলতান হাওলাদার (৪২), হাসিব(৬), সালমা বেগম (৩০), সাজ্জাদ (২), লাবনী আক্ততারসহ (৭) অন্তত: ১৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন। খুলনা নৌ বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের দুটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে রয়েছে। উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া নৌ বাহিনীর লেঃ কমান্ডার সেলিম বিশ^াস বলেন, ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় ট্রলারে আমরা কোন মৃত দেহ পাওয়া যায়নি। আমাদের ডুবুরি দল এখন ডুবে যাওয়া ট্রলারসহ আশপাশের এলাকায় মৃত দেহ উদ্ধারে খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আমরা নির্দিষ্ট একটি এলাকায় তল্লাশি চলাচ্ছি। এখন থেকে কোন মৃত দেহ না পাওয়া গেলে আমরা উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করবো।