মো: নাজমুল হুদা মানিক ॥ সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেছেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের জননন্দিত মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু। জনসমাগম কমাতে ময়মনসিংহের জনবহুল এলাকা মেছুয়া বাজার হতে কাঁচা বাজারটি সড়িয়ে নিয়েছেন পার্কের নিচে ব্রম্মপুত্র নদের পাড়ে খোলা মাঠে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও ভয়াবহতা রোধে ময়মনসিংহের নাগরবাসীকে নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে সবচেয়ে ব্যাস্ততম এলাকার বড় কাঁচাবাজার সাময়িক ভাবে মেছুয়া বাজার থেকে কাচারিঘাটে নেয়া হয়েছে। কাঁচা বাজার স্থানান্তরে সময়োপযোগী এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে নগরবাসী। সাময়িক কষ্টের জন্য ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রিয় মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন । ৮ এপ্রিল বিকেলে সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু, জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান, র্যাব-১৪’র অধিনায়ক লে. কর্নেল ইফতেখার উদ্দিন, চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি শংকর সাহাসহ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা ও সবজি বিক্রেতা সমিতির নেতারা নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করার পর এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ১০ এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে প্রতিদিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত মেছুয়া বাজারের পরিবর্তে কাচারীঘাট মাঠে কাঁচা বাজারের কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের জননন্দিত মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু প্রায় প্রতিদিন বাজারটির খোজখবর রাখছেন। মেয়র টিটু সাংবাদিকদের বলেন, করোনার সংক্রমণ এড়াতে সতর্ক থাকা ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ নেই। সেজন্য সামাজিক দূরত্ব রজায় রাখতে কাঁচাবাজার স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা একটি দোকান থেকে আরেকটি দোকান ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থে বাঁশ দিয়ে দূরত্ব তৈরি করে দিয়েছি। মেয়র টিটু নগরবাসীকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে সাময়িক কষ্ট মেনে নিতে অনুরোধ জানান । রাষ্ট্রনায়ক সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দেওয়ার আগেই মসিক মেয়র টিটু এমন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন। নাগরিকবৃন্দ বলেন, ময়মনসিংহ বাসীকে নিরাপদ রাখতে কর্মতৎপর এমন মেয়রকেই আমরা চেয়েছিলাম। যিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের। একেই বলে নগরপিতা যিনি ময়মনসিংহের মানুষ ও পরিবেশকে নিয়ে ভাবেন। চিন্তা-চেতনায় যিনি সর্বসময় নগরবাসীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। অবশেষে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র টিটুর এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রায় সপ্তাহ খানেক পর ১২ এপ্রিল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) পরিস্থিতি নিয়ে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাঠ বা খোলা জায়গায় দূরত্বটা বজায় রেখে যার যার পণ্য নিয়ে বসবে। সবাই সেখান থেকে কিনে নিয়ে চলে যাবে। কোনো ভিড় যেন না হয়। সে বিষয়ে আপনারা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। এরপরই নির্দেশনা জারি করলো স্থানীয় সরকার বিভাগ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শের পর দেশের হাট-বাজারগুলো খোলা জায়গায় স্থানান্তরে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। স্থানীয় সরকার বিভাগ ১২ এপ্রিল জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের এই নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ হাট-বাজার সংকীর্ণ স্থানে অবস্থিত। ফলে হাট-বাজারে অবস্থানরত ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে করেনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভব মোকাবেলায় গ্রামীণ হাট-বাজার গুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্রয়-বিক্রয় করা প্রয়োজন।’ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে গ্রামীণ কাঁচা বাজারগুলো তুলনামূলক ভাবে খোলা স্থানে স্থানান্তর করা হলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে সরকার। এজন্য করেনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত করতে গ্রামীণ হাট-বাজার, কাঁচা বাজারগুলো পাশের স্কুলের মাঠ, খোলা মাঠ এবং খোলা জায়গায় স্থানান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।