(২য় পর্ব)
সাক্ষাৎকার গ্রহন ও অনুলিখনঃ নুরে আলম মুকতা
ভিডিও ধারনঃ
জনাব মোহাঃ আহশানুর রশীদ রানা
সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট এলাকা মুলত মুক্ত এলাকা হলেও এর অবদান অপরিসীম । মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ, রসদ সরবরাহ, ভারতীয় সেনাবাহিনী ও প্রবাসী সরকারের সাথে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে অসাধারণ এক ভুমিকা রেখেছে ।
গোমস্তাপুর, রহনপুর, শিবগঞ্জের রনাঙ্গনে ভোলাহাটে প্রশিক্ষিত গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান কোনদিন অস্বীকার করা যাবে না।
শেখ মো আব্দুর রাজ্জাক আর মোখতার ভাই ছিলেন প্রশিক্ষিত সেনা। এজন্য তাঁরা নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তুলেছিলেন বিশাল মুক্তিযোদ্ধা নেটওয়ার্ক । সাথে ছিলেন অনেক বীর বাহিনী
এদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ না করলে অন্যায় হবে, মাহতাব উদ্দিন পান্না, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, মোঃ হাসান আলী, এনামুল হক ঘিনু, সুলতান, আনিসুর রহমান, হাসিমুদ্দিন, আর্জেদ আলী , ওবাদুল মোখতার সহ আরও অনেকে। এ তালিকা বিশাল হবে। এ সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্ভব নয়।
দয়া করে ত্রুটি মার্জনা করবেন।
এ মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন সম্মুখ সারির, প্রশিক্ষক ও সংগঠক।
পাশ্ববর্তী শিবগঞ্জের সোনামসজিদ সংলগ্ন এলাকায় হয়েছিল নারকীয় যুদ্ধ । যে যুদ্ধের ময়দানে নিহত বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহীউদ্দীন জাহাঙ্গীর চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। তাহলে বলাই বাহুল্য কী রকম রনক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা গন পাকিস্তানি হানাদার দের সাথে লড়াই করেছিলেন।
এরকম একটি যুদ্ধে প্রশিক্ষিত যোদ্ধা হিসেবে কমান্ড পরিচালনা করার নিমিত্তে ডাকা হয়েছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল মোখতার কে।
শিবগঞ্জ উপজেলার মহদী পুর রণাঙ্গনে রুখে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের বিশাল অগ্রসরমাণ সেনা বহর মাত্র কয়েকজন অসমসাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধার গেরিলা ইউনিট নিয়ে ।
বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হবার পর ওরা পিছু হটেছিল।
ততক্ষণে মুক্তিযোদ্ধা দল অবস্থান পরিবর্তন করতে চাইছিলেন।
সেদিনের অপারেশন যখন প্রায় শেষ তখন শত্রু পক্ষের একটি বুলেট মোখতার ভাই এর পাঁজর ছিদ্র করে দিয়ে চলে যায় ।
মারত্মক আহত অবস্থায় অবস্থান ত্যাগ করতে সমর্থ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবাদুল মোখতার।
পরে ভারতীয় আর্মির সহায়তায় ভারতের মালদহ জেলা সদর হাসপাতাল আর শিলিগুড়িতে চিকিৎসা নিয়ে শত্রু মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন ,
প্রিয় বন্ধু আসুন এ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের
আমরা স্যালুট করি
সালাম জানাই ,
“বল বীর
বল চির উন্নত মম
শির —
শির নেহারি
আমারি নত শির
ঐ শিখর হিমাদ্রীর !
“আমি ঝঞ্ঝা, আমি ঘূর্ণী,
আমি পথ-সম্মুখে যাহা পাই যাই চূর্ণী!
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই,
আমি মুক্ত জীবনানন্দ।”
– কবি কাজী নজরুল ইসলাম
( বিদ্রোহী)
(বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের গল্প চলমান থাকবে প্রিয় বন্ধু)