রানীশংকৈল প্রতিনিধিঃ-
সেনা সদস্য সোহেল ছুটিতে এসেছিলেন বাড়ীতে। ছুটিতে বাড়ীতে আসার সুবাধে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে নেকমরদ এলাকার নয়াদিঘী নামক গ্রামের দিনমজুর সরবাতু মোহাম্মদের কন্যা ও সেনা সদস্যর প্রেমিকা জনৈকের সাথে যান দেখা করতে। এক পর্যায়ে মেয়ের ঘরে ঢুকে অবৈধ মেলামেশায় জড়িয়ে পড়েন মেয়েটির সাথে। বাড়ীর লোকজন টের পেয়ে আটক করেন এই সেনা সদস্যকে। পরে খবর দেওয়া হয় ছেলের বাবাকে তারপর সালিশের নামে ১ রাত ১দিন সময় অতিবাহিত করে ইউপি চেয়ারম্যান তিন লক্ষ আশি হাজার টাকা জরিমানা করে দেন সমাধান। এ সমাধানে রাজি ছিলো না মেয়ের বাবা দিনমজুর সরবাতু মোহাম্মদ। চেয়ারম্যান জোর করেই এমন সমাধান দিয়েছেন বলে অভিযোগ মেয়ের বাবার। ঠিক এমন ঘটনার এমন বিচার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার ২নং নেকমরদ ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হকের বিরুদ্বে। এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ঝড় উঠলে আমাদের প্রতিবেদক ১৬ সেপ্টেম্বর ঘটনা অনুসন্ধান করে বের করে।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়,বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার গড়গাঁও গ্রামের আঃ-জব্বারের ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকুরীত সোহেল দীর্ঘদিন যাবৎ পার্শ¦বর্তী রানীশংকৈল উপজেলার ২নং নেকমরদ নয়াদিঘী গ্রামের সরবাতু মোহাম্মদের মেয়ের সাথে প্রেমের সর্ম্পকে জড়িয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মেলামেশা করে আসছেন। সর্ম্পকে জড়িয়ে বিভিন্ন সময় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে ইতিপূর্বেও মেলামেশা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে মেয়েটির বাড়ীতে অবৈধভাবে মেলামেশার সময় মেয়ের পরিবারের লোকজনের কাছে হাতেনাতে আটক হয় সেনা সদস্য সোহেল। মেয়ের পরিবার ছেলে মেয়েকে ঐ ঘরেই আটকে রেখে খবর দেয় ছেলের বাবাকে ও ২নং নেকমরদ ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হককে। চেয়ারম্যান ঐ রাতেই ঘটনাস্থলে এসে সমাধানের চেষ্টা করেন। সমাধান করার প্রাক্কালে ছেলে তার বাবাকে রেখে প্রসাব করার নাম করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। পরবর্তী ছেলের বাবাকে ঐ রাতে আটক করে রাখা হয়। পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর ৩টা পর্যন্ত। পরে সমাধানের জন্য বসা হয় চেয়ারম্যানের চেম্বারে সেখানে সমাধান না হওয়ায় আরেক দফা বসা হয় নেকমরদ বণিক সমিতির সভাপতির ব্যবসায়িক চেম্বারে। সেখানে মেয়েটির ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা না করে মেয়েটির ইজ্বতের মূল্য নির্ধারণ করা হয় তিন লক্ষ আশি হাজার টাকা। তবে মেয়ের বাবা তার বসতভিটা বিক্রি করে আট লক্ষ টাকা দানে সেনা সদস্যর সাথে তার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার প্র¯তাব দেন সে প্রস্তাব প্রত্যাখান করে ছেলের পরিবার। কিন্তু চেয়ারম্যান অজ্ঞাত কারনেই ছেলের পক্ষে শত শত উৎসুক জনতার সামনে তিন লক্ষ আশি হাজার টাকার রায় দিয়ে বিচার শেষ করে এবং এক ধরনের জোর করে মেয়ের বাবার হাতে টাকা গুজে দেয়। এ বিচারের বিরুদ্বে মেয়ে পরিবারের আপত্তি থাকলেও সেদিকে কর্ণপাত ছিলো না চেয়ারম্যান এনামুলসহ উপস্থিত বিচারকদের। মেয়ের বাবা সরবাতু মোহাম্মদের বক্তব্য টাকা দিয়ে কি হবে,আমার মেয়ের সন্মান ফিরে আসবে না,আমার মেয়েকে বিয়ে কে করবে? আমি গরিব বলে কি বিচার পাবো না।

অভিযোগ উঠেছে মেয়ে পরিবারটি গরিব হওয়ার সুবাধে প্রভাবশালীদের প্রভাবে ও বিশাল অংকের অর্থনৈতিক লেনদেনের বিনিময়ে পার পেয়ে গেছে সেনা সদস্য সোহেল। আর গরিব পরিবারের মেয়েটির ভবিষ্যৎতের কথা চিন্তা না করে মেয়েটির ইজ্বতের মূল্যে ধরা হয়েছে মোটা অংকের টাকা। যে টাকা কখনোই একটি মেয়ের ইজ্বত ফিরিয়ে দিতে পারবে না। এ বিচার কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে নেকমরদ এলাকায়।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হকের বক্তব্য নিতে শনিবার রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন কেটে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন