সুজাউল ইসলাম সুজা,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
আ’লীগ নেতা রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাত ও তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, সীমাহিন দূর্নীতি, সনদপত্র জালিয়াতি, নারী কেলেংকারী, চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারনা, একাধীক ভুয়া প্রকল্প, ডাকাতির মদদ দাতাসহ ২১টি অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে রৌমারী উপজেলার ৬ ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা দুই ভাইস চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে অনাস্থ এনে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বাক্ষরিত একটি লিখিত আবেদন করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যানকে ঘিরে সামলোচনার ঝড় উঠেছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান গত ২৩ এপ্রিল ১৪ সালে দায়িত্ব ভার গ্রহণ করার পর থেকে ক্ষমতাশীন দলের প্রভাব দেখিয়ে একক রেজুলেশনের মাধ্যমে মালি ও টেকনিশিয়ান পদে মোটা অংকের অর্থের বিনিময় নিয়োগ দেন। নিয়োগকৃতদের বিধিবর্হিভুত ভাবে রাজস্ব তহবিল থেকে বেতন ভাতাও দিচ্ছেন তিনি। উপজেলা পরিষদে শূর্ণপদ না থাকা সত্বেও জোসনা নামের এক নারীকে অফিস সহায়ক পদে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে নিয়োগ দেন তিনি। চাকুরি দেয়ার সুবাদে ঐ নারীকে একাধিক বার নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ করেন ঐ নারী। পরে বিল বেতন না হলে ঘুষের টাকা ফেরত চাইলে তাকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হলে ভুক্তভোগি জোসনা বাদী হয়ে রৌমারী থানা ও বিভিন্ন দপ্তরে, ঘুষ, প্রতারণা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে আরো বলা হয় সরকারী বিধি মোতাবেক রাজস্ব উদ্ধৃত্ত উন্নয়ন তহবিলে স্থানান্তরের বিধান থাকলেও তিনি তা না করে ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে মোট ৬৭ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এনিয়ে প্রশাসনের টনক নড়লে বাধ্য হয়ে গত ১১ এপ্রিল ১৬ সালে উন্নয়ন তহবিল নামে নতুন একটি হিসাব খাত সৃষ্টি করেন। তবে এ হিসাব খাত আজেও ব্যবহার করা হয়নি। এছাড়াও নীতিবর্হিভুত ভাবে শুধু কাগজে কলমে ব্যয় দেখিয়ে রাজস্ব তহবিলের ৫০ লক্ষ টাকা পকেটস্থ করেছেন। অপর দিকে কোন কাজ না করেই নামে বেনামে অসংখ্য প্রকল্প দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ভুমি হস্তান্তরে ১% খাত হতে ১২ লক্ষ টাকা নাম মাত্র প্রকল্প দেখিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। বাসভবন থাকা সত্বেও বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা উত্তোলন করছেন।
অপরদিকে অপ্রত্যাশিত খাত থেকে সর্বচ্চ ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করার বিধান থাকলেও গত জুলাই-আগষ্ট ১৬ সালে দুই মাসে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের টিআর, কাবিখা,কাবিটা, বরাদ্দের প্রকল্পের কাজ না করেই বিল পরিশোধ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান নিজেই দুটি প্রকল্পের নাম মাত্র কাজ করে ৩ লক্ষ ১হাজার ৬৫৩ টাকা আত্মসাত করেন। মাস্টাররোল কর্মচারীদের ঈদের বেতন-বোনাস দেখিয়ে ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে ৪৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে মেরে দেন। ৮ই জুন ১৬ তে মাটি কাটা শ্রমিকদের মজুরীর টাকা কম দেওয়ার অপরাধে লাঞ্চিত হন। এছাড়াও তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগসাজসে হাট-বাজার ইজারা প্রদান সংক্রান্তে ইজারা মুল্যের ১০% অর্থ প্রাপ্তির গোপন আশ্বাসে ৯০ টাকার পে-অডারকে চক্রান্ত মুলক ৯০ লক্ষ টাকা বানিয়ে খালেদা নাহিদকে ইজারার ঘোষনা দিলে পরিষদে তোলপাড় শুরু হয় এবং পরে তা জালিয়াতি প্রমানিত হয়।
এদিকে উপজেলার যাদুরচর ডিগ্রি কলেজের সভাপতি পদ নিয়ে অধ্যক্ষ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই সুত্র ধরে গত ৩ জানুয়ারী ১৭ সালে অধ্যক্ষের বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে। পরে চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানকে ১ নং আসামী করে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রৌমারী থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলা প্রত্যাহারের জন্য অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামকে চাপ সৃষ্টি ও প্রাণ নাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে রৌমারী থানায় একটি জিডি করা হয়। গত ১০ জানুয়ারী ১৭ ইং এশিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ কলেজ থেকে একটি ভুয়া সনদের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান যাদুরচর ডিগ্রি কলেজের প্রতারনামুলক সভাপতি মনোনিত হন। এনিয়ে এশিয়া ইউনির্ভাশিটিতে যোগাযোগ করে জানায়ায় তার সনদ ভুয়া। ঐ কলেজের অধ্যক্ষ কোর্টে মামলা করেছেন ভ’য়া সনদের সভাপতির বিরুদ্ধে।

এব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পর্ণ মিথা। #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *