এস.এম.রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বশরীররে ক্লাস শুরু হওয়ার স্বস্তি মিলেছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের। তেমনি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় স্কুল নির্ভর দোকানদারদের জীবিকা সচল হচ্ছে।

রবিবার দুপুরে সরেজমিনে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং জমিরউদ্দীন শাহ্ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে কথা হয় ঝালমুড়ি বিক্রেতা তরুণী কান্তের সঙ্গে। তিনি গত প্রায় ১৫ বছর ধরে এখানে ঝালমুড়ি, বাদাম, ছোলা বিক্রি করে সংসার চালান। এটাই তাঁর পেশা। এই ব্যবসায় পুঁজি কম, শ্রম কম লাগে। তা ছাড়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে খাবার বেচে অনেক আনন্দ পান তিনি। কিন্তু করোনায় স্কুল বন্ধের পর অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছেন। এখন স্কুল খুলছে, ফের দোকান করছেন।

ঝালমুড়ি কিনতে এসে মহাদেব, হৃদয়সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, এত দিন বাসায় পড়াশোনা করলেও অনেক কিছু শিখতে পারেনি। এখন স্কুলে স্যারেরা পড়া বোঝাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিদিন ঝালমুড়ি খেতে পারছে। অনেক মজা হচ্ছে।

খানসামা সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কথা হয় শাহাজাদ হোসেনের সাথে। তিনি এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন আগে। গত ২০ বছর থেকে এই স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি ঝালমুড়ি ও বাদামের দোকান করেন। বর্তমানেও সেখানে দোকান করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। স্কুল বন্ধ থাকায় এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। জীবিকার তাগিদে সন্ধা হতে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন হাট বাজারে ঝাল মুড়ি বিক্রি করেছেন। কিন্তু করোনায় স্কুলের সামনে দোকানের বিক্রি না হওয়ায় তেমন লাভ হয়নি। বরং অনেক লোকসান হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছে মুড়ি বিক্রি করতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। তাদের দেখতে প্রায়ই মাঠে আসতাম। যখন দেখতাম কেউ নেই, মনটা বিষাদে ভরে উঠত। আর যেন স্কুল বন্ধ না হয়। সবকিছু যেন আগের মতো ঠিকঠাক চলে।’

শুধু তরুণী কান্ত কিংবা শাহজাদ হোসেন
নন। তাঁদের মতো অনেকেই স্কুল-কলেজকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় তাঁদের জীবিকার চাকা আবার ঘুরতে শুরু করেছে।

এদিকে স্কুল-কলেজ ঘেঁষে গড়ে ওঠা কয়েকটি বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ছাত্র-ছাত্রী না আসায় তাঁদের দোকানে খাতা, কলম ও বইয়ের মতো শিক্ষাসামগ্রী বিক্রি একপ্রকার বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। এখন ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস খোলায় ফের শিক্ষার্থীরা কেনাকাটা করছে। বেড়েছে আয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *