jhenidah-snake-play-photo-08-10-16-9
এইচ.এম ইমরান, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) থেকে:
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা।
শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত উপজেলার বিএলকে স্কুল প্রাঙ্গণে এ খেলার আয়োজন করে এলাকাবাসী।
বিষধর সাপ নিয়ে খেলা দেখতে স্কুল প্রাঙ্গণে ভীড় করেছিল শত শত মানুষ।
আর দর্শকদের হাততালি আর উল্লাসে খেলা দেখাতে ব্যস্ত সাপুড়েরা।
কালের বিবর্তণে হারিয়ে যাওয়া ঝাপান খেলা আবারো ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে শৈলকুপা উপজেলার বিএলকে এলাকাবাসী।
শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বিএলকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী এ খেলা।
বাদ্যের তালে তালে ঝুড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে ভয়ংকর গোখরা সাপ। উপস্থিত শত শত দর্শকের করতালি একটুও বিচলিত করতে পারে না ফণা তুলে এই নাচিয়েকে। মনিবের ইশারা ইঙ্গিত তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিয়েছে, শুধু মানুষকে আনন্দ দেয়ার খেলা নয় বরং আজ মর্যাদার লড়াই।
ঐতিহ্যবাহী এই সাপ খেলা দেখতে ভিড় করেন হাজারো দর্শক। বাদ পড়েনী মহিলা দর্শকরাও। ঢাক আর ডোলের বাদন আর নাছ গানে সাপুড়েরা দর্শকদের মন ভরিয়ে তোলেন।
৭ টি সাপুড়ে দলের শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় কসরত।
আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা।
অনেকে জীবনে প্রথম আবার অনেকে অনেক দিন পর দেখছেন এ খেলা। এই ‘ঝাপান খেলা’ দেখে খুবই আনন্দিত হয় দর্শক।
শৈলকুপার অংশগ্রহণকারী সাপুড়ে লিটন জানান, এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা। আমার আগে আমার বাবা তার আগে তার বাবা সকলেই সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন ধারন করতেন। আমরা বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াই। এ ধরনের আয়োজন হলে এলাকার সাপুড়েদের মিলন মেলায় অনেক ভাব বিনিময় ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপের খোঁজ খবর পাওয়া যায় বলে জানান বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাপুড়েরা।
এ ব্যাপারে আয়োজক সাবেক যুগ্ম-সচিব মীর সাহাব উদ্দিন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন। কালের বিবর্তনে লোকাচারের অনেক কিছুই এখন হারিয়ে গেছে। কিন্তু ঝাপাং গানের কোনো হেরফের হয়নি। সেই মধ্যযুগ হয়ে একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কাছে এখনো সমান জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে এটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন