রাজনৈতিক প্রতিবেদক
ষোড়শ সংশোধনীর ওপর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে অভিমত প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, এই রায়ের পরই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত ছিল। বরং এ রায় নিয়ে সরকারি দল বিতর্ক সৃষ্টি করে এটাই প্রমাণ করেছে তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চায় না।

শনিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনীর এই রায়ে দেশের বর্তমান সংকটসমূহের ওপর অনেক মূল্যবান মন্তব্য করা হয়েছে। দেশের সব শ্রেণির মানুষের মনের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এটা একটি ঐতিহাসিক রায়।

নেতৃদ্বয় বলেছেন, প্রধান বিচারপতি যে মতামত প্রকাশ করেছেন তা যথার্থই হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পর্কে সবাইকে অধিকতর সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কেউ কেউ বলবেন প্রধান বিচারপতি রাজনৈতিক কথা বলেছেন। যদি শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কথা হয় তা হলে শাসনতন্ত্রের রক্ষক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টকেও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতে হবে।

তারা আরো বলেন, দেশে বর্তমানে গণতন্ত্র, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অধিকার, মৌলিক মানবাধিকার যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে; যেভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রহসনে পরিনত করা হয়েছে, সামাজিকভাবে সরকারের পেটুয়াবাহিনী হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও দখলবাজি চালিয়ে যাচ্ছে এতে সরকার, জনগণের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এ অবস্থা স্বাধীনতার পর থেকে সকল সরকারের আমলেই উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নির্বাচিত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ ও জবাবদিহিতামূলক সরকার থাকতে হবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার গণতন্ত্র ও আইনের শাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরই পদত্যাগ করতো।

নেতৃদ্বয় ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, বর্তমান এ সরকার অবৈধভাবে অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় আছে। আপিল বিভাগের যে পূর্ণাঙ্গ রায় বেরিয়েছে, যেকোনো সভ্য দেশ হলে, গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার পদত্যাগ করতো। পত্রপত্রিকায় রায়ের যে অংশ পেয়েছি, বিচার বিভাগ বলেছে, দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, এদেশে পার্লামেন্টে নন ফাংশনাল হয়ে গেছে, এদেশে আইনের শাসন নেই এবং বিচার বিভাগকে তারা (সরকার) নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এমনকি এ কথাও পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে যে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।

তারা বলেন, এই সরকার সর্বোতভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছে। আজকে আমরা এ সভা থেকে আহবান জানাচ্ছি অবিলম্বে পদত্যাগ করে একটি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা করা হোক।

নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী মানুষ। সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে মানুষের আশা-আকাঙ্খাগুলোকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে এখানে ক্ষমতায় কেউ টিকে থাকতে পারেনি, আজকে যে অবৈধ অনৈতিক সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। জনগণের যে রায় সেই রায়ে তারা পরাজিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন