মোঃখলিলুর রহমান
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়ীত্ব পালনের সময় নির্যাতন ও নিগৃহীতের মাএা ক্রমেই বেড়ে চলছে।
সম্প্রতি প্রায়ই সাংবাদিক নির্যাতনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
পূর্ববর্তী সব শাসনামলেই বহ সাংবাদিক নিগৃহীত, নির্যাতিত ও হত্যার শিকার হয়েছেন।
বর্তমান সরকারের মেয়াদেও সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা একের পর এক ঘটে যাচ্ছে। কখনো
অচেনা সন্ত্রাসীরা, কখনো বা পলিশ অাবার কখনো, জনপ্রতিনিধিরাও এ নির্যাতনে অংশ নিচ্ছেন।
সাংবাদিকরা নির্যাতিত হন, মারা যান, খুন হন, গুম হন, কিন্তু কোনোটির যথাযথ বিচার হয় না।
প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে সাংবাদিক নির্যাতনেন ঘৃণ্য ঘটনা। এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয় মানববন্বনের মতো শান্তিপূর্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে।
কিন্তু কখনোই দেখা যায়নি এর চুড়ান্ত ও যথাযথ সমাধান কিংবা উপযুক্ত পদক্ষেপ। সিরাজগঞ্জে গত বৃহস্পতিবার অাওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবি্দ্ব হন সমকাল-এর শাহাজাদপুর প্রতিনিধি অাব্দুল হাকিম শিমুল।গত শুক্রবার তাঁর মৃত্য হয়। এ খবর শুনে তার
নানি রোকেয়া বেগম ও মারা যান। এ ঘটনায় এখন সারাদেশে তোলপাড় চলছে।চট্রগ্রাম ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্হানে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে মানববন্বন ও সভা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর অাগেও বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বা প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে রোষানলের শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা।
সম্প্রতি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্বের দাবিতে ডাকা হরতালের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে শাহবাগে পুলিশের মারধরের শিকার হন এটিএন নিউজের রিপর্টার কাজী এহসান ও ক্যামেরাপর্সন অাব্দুল অালিম।
মেয়র মিরুর গুলিতেইমৃত্যুঃ
এদিকে পুলিশের সামনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা অাওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমুল হক মিরুর গুলিতেই সাংবাদিক অাব্দুল হাকিম শিমুলের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পলিশ। শাহজাদপুর সরকারি কলেজ ছাএলীগের সভাপতি বিজয় মাহমুদকে বৃহস্পতিবার মারধর করার অভিযোগে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ মেয়র মিরুর বাড়ি ঘেরাও করলে স্হানীয় অাওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি অাব্দুল হাকিম শিমুল গুলিবিব্দ্দ্ব হয়ে পরে পরে চিকিৎসাধীন অবস্হায় মারা যান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অাব্দুল হাসনাত বলেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পুলিশ সেখানে যথাসময়ে উপস্হিত হয়েছিল। ঘটনার সময় অামি সেখানে উপস্হিত ছিলাম।

মেয়রকে বারবার বারন করার পরও তিনি গুলি ছোড়েন। একাধিক গুলি করেন মেয়র। অন্য কোন পক্ষ গুলি করেনি। শাহজাদপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শনিবার সকাল সারে ১০টায় শিমুলের জানাজা পুর্ব এক সমাবেশে একথা বলেন এই পলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ” ঘটনাটি অত্যান্ত দুঃখজনক, যা অামাদের সামনেই ঘটছে।
অপরাধী যত ক্ষমতাশালীই হোক, অামরা তাকে অাইনের অাওতায় নিয়ে অাসব। ঘটনার পর মেয়রের বাড়ী থেকে ৪৩টি গুলি ও ঘটনাস্হল থেকে ৬টি গলির খোকা উদ্দার করা হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান। মমেয়র মিরুকে গ্রেপ্তারের জন্য শুক্রবার রাত থেকে বাভিন্ন স্হানে অভিযান চালানো হচ্ছে জানিয়ে তিনিবলেন, শিগগিরি তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভাব হবে।
বৃহস্পতিবার ঘটনার পর মেয়র মিরু দাবি করেছিলেন, প্রতিপক্ষের গুলির জবাবে তিনি এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন।
ক্ষোভ, উদ্বেগ ও নিন্দাঃ
সাংবাদিক হাকিম নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ, উদ্বেগও নিন্দা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। শনিবার একযুক্ত বাবৃতিতে বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল অাহসান বুলবুল, মহাসচিব ওমর ফারুক এবং ডিইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অাতিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারন সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন,পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একজন সাংবাদিক এভাবে হত্যার শিকার হওয়া সভ্য সমাজে
কাম্য হতে পারে না।
বিবৃতিতে নেতারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ
শাস্তি দাবি করে হাকিমের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।
সাংবাদিক অাব্দুল হাকিম নিহত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়াত লোকজনের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে সাংবাদিকদের অান্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিষ্টস(অাইএফজে) এবং কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিষ্টস (নিপিজে)। শুক্রবার পৃথক বিবৃতিতে অাই এফজে ও সিপিজে এ দাবি জানিয়েছে। সাংবাদিক নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে সংগঠন দুটি।
সিপিজের এশিয়া প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ষ্টিভ বালার বলেন, গুলির ঘটনা অনেকের সামনে ঘটেছে।অপরাধীকে দ্রুত বিচারের অাওতায় অানার ক্ষেএে ব্যর্থতার কোন ক্ষমা নেই। অাইএফজের সাধারন সম্পাদক অ্যাস্হনি বেলআঙ্গার বলেন, দায়ীত্ব পালনের সময় সহকর্মী অাব্দুল হাকিমের মৃত্যুর এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে সাংবাদিদের অাত্নত্যাগের ঘটনাকে স্নরন করিয়ে দেয়। অামরা হাকিম ও তার নানির মৃত্যুতে তাদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দুত হসেন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, সুশাসনের অভাবেই দেশে সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে।
গুলিতে সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে তা অার শুনিনি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন