বিশেষ প্রতিনিধি ঃ
সীতাকুণ্ডের কলেজ রোডস্থ প্রেমতলা চৌধুরী পাড়ার ছায়ানীড় বাড়িতে জঙ্গী আস্তানায় সোয়াতের আ্যাসল্ট সিক্সটিন অভিযানে দীর্ঘ ১৯ ঘন্টার পর এক নারী এক শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু এবং উক্ত বিল্ডিং এ অবরোদ্ধ হয়ে থাকা ২১ জনকে নিরাপদে বের করে আনার মধ্যেদিয়ে শেষ হয়েছে।
সকালে ২০ জন নারী পুরুষ শিশুকে উদ্ধার করা হলেও ৮ ঘন্টা পর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে একটি বন্ধ কক্ষ থেকে দরজা ভেঙ্গে ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি অজ্ঞানবস্থায় রুমে পড়ে ছিলেন বলে অভিযানকারী দলের সদস্যরা জানান। এছাড়া সন্ধ্যার দিকে এক শিশুর মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ধারণা করছে শিশুটি নিহত জঙ্গির সন্তান হবে। অভিযান শেষ হলেও তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে জঙ্গিদের অবিস্ফোরিত শক্তিশালী বোমা নিষ্ক্রিয়করণের কাজ।
.
সকালে অপারেশন “আ্যাসল্ট-১৬” সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর সোয়াত টিম ঘটনাস্থল ত্যাগ করণেও অবিস্ফোরিত গ্রেনেড নিস্কৃয়করণে রয়েছে বোমা ডিসপোজার টিম। তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০টি শক্তিশালী গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটালেও নিহত জঙ্গি দলের নারী সদস্যের শরীরে বাধা গ্রেনেডটি বিস্ফোরণ পুরো ভবনে আগুন ধরে যায়।
বোমা ডিসপোজার টিমের একজন সদস্য জানান, গ্রেনেডটি এতোটা শক্তিশালী যে এটি বিস্ফোরণ ঘটালে এলকার জনমানব এবং জনবসতির ক্ষতি হবে। আবার এটি লাশের শরীরের সাথে বাধাঁ থাকায় অন্যত্র সরানোও যাচ্ছে না। কৌসলে এটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তবে এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে ভবনে আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নির্বাপণ করেছে। এতে ভবনে থাকা আরো বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে যায়।
এদিকে ভবনের ভেতর থেকে বেশ কিছু বোমা তৈরীর সরঞ্জাম জেল স্পিন্টার, বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান- গতকাল বুধবার দুপুর ৩ টা থেকে সীতাকুণ্ডের প্রেমতলার চৌধুরী পাড়ার ছায়ানীড় বিল্ডিংএর জঙ্গী আস্তানাকে ঘিরে অব্যাহত থাকে পুলিশি অভিযান। চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ড থানার দুইশতাধিকেও অধিক পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা জঙ্গী আস্তানার আশপাশ ঘেরাও করে রাখে। ঢাকা থেকে আগত সোয়াত টিম বুধবার সাড়ে বারোটায় সীতাকুণ্ডে এসে পৌছে, পরদিন (আজ বৃহস্পতিবার) সকাল ৬ টায় অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেন তারা।
সকাল ৬ টা ১৫ মিনিটে সোয়াত টিম অপারেশন শুরু করে। তারা ফায়ারিং করতে করতে জঙ্গীদের নিকটে পৌছলে জঙ্গীদের কোমরে থাকা আত্নঘাতি গ্রেনেট বিস্ফোরন ঘটায় এতে দুই জঙ্গীর দেহ ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে যায়। সোয়াতের আক্রমনে একজন মহিলাসহ দুই জঙ্গীর মৃত্যু হয়। গ্রেনেটি বিস্ফোরনে বিকটশব্দে পুরো এলাকা কম্প্রিত হয়ে যায়। দুই জঙ্গীর দেহ ছিন্নবিন্ন হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল দুপুর তিনটা থেকে ছায়ানীড় বিল্ডিংএ ৪ পরিবারের নারী, শিশুসহ ১৮ জন আটকা পড়ে।
রেহানা আক্তার স্বামী মৃত ওয়ালিউল্লা নামের এই মহিলার মালিকানাধীন ছায়ানীড় বিল্ডিংএ গত দুই সাপ্তাহ আগে জঙ্গীরা ভাড়া নেয়।