ভুরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
অগ্নিকান্ড, ভূমিকম্প ও জলবায়ু নিয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে সেফটি স্কুল। সেফটি স্কুল একটি সংগঠন, একটি আন্দোলন। এই সংগঠনের কাজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে উল্লেখিত তিন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন ও হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া। এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার নাম সাখাওয়াত হোসেন স্বপন। বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের সীমান্ত অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রাম মংলারকুটি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর অধীনে আরবান কমিনিউনিটি ভলান্টিয়ার হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এর পর কম্প্রেহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এর প্রশিক্ষক হিসেবে পুনরায় ফায়ার সার্ভিস থেকে “ট্রেইনিং অব ট্রেইনার্স” কোর্সে অংশ নেন। প্রশিক্ষন শেষে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ঈউগচ সেলে। এরপর ২০১৫ সালে চীনের বেইজিং-এ “কমিউনিটি বেজড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইন এশিয়া” নামক গ্রীষ্মকালীন ওয়ার্কশপে যোগ দেন।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার পাশপাশি “সেফটি স্কুল” নামের সংগঠনটি চালু করেন তিনি। ২০১৬ সালে ১৪জন উদ্দ্যমি যুবককে নিয়ে ঢাকার পুরানা পলটনে প্রতিষ্ঠা করেন এই স্কুলটি। স্কুলটি রাজধানীতে হলেও এর কার্যক্রম দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত। স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনটির কার্যক্রম চলে নিজেদের অর্থে এবং বিভিন্ন স্তরের কিছু সহৃদয় মানুষের সহোগীতায়। স্বপন জানান, সেফটি স্কুল এক ধরণের আন্দোলন, যার মাধ্যমে তিনি দেশের মানুষকে অগ্নিকান্ড, ভূমিকম্প ও জলবায়ু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চান। যে কোনো স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কোনো সংগঠন ডাকলেই সারা দেয় সংঠনটি এবং সচেতনতামূলক ধারণা দেন এসব বিষয়ে।
সম্প্রতি তার পাঠ নেয়া কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের শাহীবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও বলদিয়া ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দিনব্যাপি অগ্নিকান্ডের কারণ, অগ্নিকান্ডে করনীয়, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভুমিকম্প ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতামূলক সেমিনার করেন তিনি। এখানে দৈনিক ভোরের ডাক প্রতিনিধিকে তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের মাঝে দুর্যোগ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিই হচ্ছে তার সেফটি স্কুলের মূল লক্ষ্য । তিনি আরো জানান, নিজ এলাকা এবং জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব বিষয় নিয়ে পর্যায়ক্রমে কাজ করে যাবেন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলে স্বপন গুরুত্বপূর্ণ এসব বিষয় নিয়ে কাজ করায় ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অবদান রাখায় বেসরককারী উন্নয়ন সংস্থা সিইডিএ ২০১৭ সালে তাকে সম্মাননা প্রদান করেন।