ফারহানা আক্তার, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

গসদজয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে অটো রাইস মিলের গরম পানি, ছাই ও দূষিত বজের্য শত বিঘা আবাদি জমির ফসল হুমকির মুখে পড়েছে। ফসলের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি মিলের বর্জ্য পদার্থের কারনে এলাকার পরিবেশও দুষিত হচ্ছে। অটো রাইস মিলের বর্জ্য ও গরম পানির কারনে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন করতে নাপারায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন কাজে আসনে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। যদিও অটো রাইস মিলগুলোর দাবি, নিয়ম মেনেই তারা অটো রাইস মিল চালাচ্ছেন। তাদের মিলের কোন গরম পানি বা দূষিত বর্জ্যে কৃষকের কোন ক্ষতি হয়নি।

পাঁচবিবি পৌরসভার গোপালপুর এলাকায় মেসার্স এনবি ও মেসার্স এনএস অটো রাইস মিল পাশাপাশি অবস্থিত। রাইস মিলগুলোর পশ্চিম পাশের্ব আছে সরকারি মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র। মিলগুলোর উত্তর ও পুর্ব পাশের্ব রয়েছে ফসলি জমি আর দক্ষিণ পাশের্ব আবাসিক এলাকা। এ ছাড়াও আধা কিলোমিটার দুরে অবস্থিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে। তবুও অটো রাইস মিলের গরম পানি, ছাই ও দূষিত বজের্যর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না স্থানীয় এলাকাবাসী।

গোপালপুর গ্রামের কৃষক গোলাম রসুল বলেন, মেসার্স এনবি ও মেসার্স এনএস অটো রাইস মিলের গরম পানি ও দূষিত বর্জ্যের কারনে আমাদের ফসল নষ্ট হচ্ছে। গাছপালার ফল হচ্ছেনা। অটো রাইস মিলের ছাঁই উড়ে ঘরবাড়ি ভরে যাচ্ছে। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কাজ হচ্ছেনা।

একই এলাকার খায়রুজ্জামান বলেন, অটো রাইস মিলের দক্ষিণ পাশে আমার দুই বিঘা জমি আছে। এর মধ্যে ৮ শতক জমিতে ঝাল চাষ করতাম। আগে ৮ শতক জমিতে ৮ মন ঝাল হলেও এই মিলের দূষিত বজের্যর কারনে আর ঝাল হয়না।

একই অভিযোগ এলাকার কৃষক আনিছুর রহমানের। তিঁনি বলেন, কারখানার গরম পানি ও দূষিত বর্জ্যের কারনে জমিতে বীজ রোপন করলে অনেক বীজ নষ্ট হয়। তাছাড়া মাঠে পানি থাকার কারনে সময় মত ফসল রোপন ও কাটা মাড়াই করতে পারিনা।

মেসার্স এনবি অটো রাইস মিলের সত্ত্বাধিকারী শরীফুল ইসলাম বলেন, আমার মিলের কোন পানি বা বর্জ্য কৃষকের ফসল নষ্ট করেনি। নিয়ম মেনে আমার অটো রাইস মিল পরিচালনা করছি। গরম পানি ও বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য নিজস্ব জায়গা আছে। মিলের ছাঁই যেন বাহিরে না যায় একারনে মিলে বাউন্ডারি দিয়ে রেখেছি। কৃষকরা যেই ড্রেন দিয়ে আমার মিলের বর্জ্য ও গরম পানি ফসলে যাওয়ার কথা বলছে সেই ড্রেন দিয়ে পৌরসভার হাট বাজার সহ একাধিক মিলের পানি প্রবাহিত হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকতার্ কৃষিবিদ মো.লুৎফর রহমান বলেন, দূষিত বর্জ্য ও গরম পানি ফসলের জন্য ক্ষতিকর। দুষিত বজের্যর কারনে ফসল নষ্ট হয়।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ (ইউএনও) মো.বরমান হোসেন বলেন, এ বিষয়য়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *