খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ কাঁধে সন্তানের মরদেহ বহন করে দাফন শেষে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির পর হত্যা শিশু আরিফুজ্জামান ইসলামের বাবা মো.আতিউর রহামান কান্নার স্বরে বলেন, আমরা বাপ-বেটা সকালে এক সাথে রসুন বুনিছি, দুপুরে ৪ ছেলেসহ এক সাথে বেলা নদীতে গোসল করিছি। শেম্পু ভাগাভাগি করি সবায় মাথায় মাখিয়া গোসল করার সময় ইয়ার্কি-ফাজলামি করিছি। এক সাথে জুম্মার নামাজ পড়িছি। দুপুরের খাওয়া খাইছি। এখনো তামাম চোউখোত ভাসেছে। আহ হারে ছোওয়ালটাক এইভাবে মারি ফেলাইবে কায় বা জানে।
তিনি আরো বলেন, অভাবের সংসারে ৪ ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে আরিফুজ্জামান (৮) ছিলো আমাদের সংসারে আলোর প্রদীপ। পরিবারে ছোট ছেলে হওয়ায় সবার ছিলো তার প্রতি বাড়তি আদর, সোহাগ ও যত্ন। আমি জমিতে কাজ করতে গেলে কেউ না গেলেও সে আমার পিছু ছুটতো। আমাকে সহায়তা করতো ক্ষেতের কাজসহ সব জায়গায়। লেখাপড়ায় খুব ভাল ছিল সে।
নিহত শিশু আরিফুজ্জামান ইসলামের বাড়ি খানসামা উপজেলার কায়েমপুর গ্রামের ডাক্তার পাড়ায়। সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় দেখা যায় পুরো বাড়ি হাজার হাজার লোকে পরিপূর্ণ। আরিফুজ্জামানের দাফন কাজে অংশ নিতে অসংখ্য মানুষ জমা হয়েছে। সেই সাথে দেখা যায় মরদেহ দেখার জন্যে আবাল-বৃদ্ধ,বনিতার উপচে পড়া ভিড়।
বাড়ির পাশের স্থানীয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে আরিফুজ্জামানের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। সন্তানের শোকে নিহত আরিফুরজ্জামানের মা মেরিনা আক্তার বারবার মুর্চা যাচ্ছেন। শোকে পাথর মায়ের চোখে পানি ছাড়া আর কিছুই নেই।
স্থানীয়রা বলেন, বাবার কাঁধে সন্তানের লাশের চেয়ে আর কি দুঃজনক হতে পারে! যা দেখে আমরা সবাই হতভম্ব। এমন ঘটনা কারো কাম্য নয়। ছেলেটির প্রতি মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এই অসংখ্য মানুষের সমাগমেই তার প্রমাণ।