ঢাকা সংবাদদাতাঃ
আগামীকাল ৯ জুলাই ‘২০১৬ ইং প্রগতিশীল, জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মহানায়ক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি‘র প্রাক্তন চেয়াররম্যান ও সাবেক সিনিয়র মন্ত্রী জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার‘র ৯৩তম জন্মবার্ষিকী।
অনণ্য প্রতিভার এই জননেতা ১৯২৪ সালের ৯ জুলাই তৎকালীল রংপুর জেলা আজকের নীলফামারী জেলার ডিমলার খসাখড়ীবাড়ীর সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা ওসমান গনি ও মা আবিউননেছা তৎকালীন সমাজে সম্মানিয় ব্যাক্তিত্ব ছিলেন। ১৯৭৯ সালের ১২ মার্চ জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে তিনি দেশবাসীকে শোকসাগওে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান।
যাদু মিয়া ৪০-শেষের দিকে তিনি ইয়াং ম্যান এসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান ছিলেন। ৫০-দশকের শেষ দিকে রংপুর জেলা বোর্ডের কনিষ্ঠতম চেয়াররম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৫৭সালে মওলানা ভাসানীর আহ্বানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে তিনি অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন এবং মওলানা ভাসানী প্রতিষ্ঠিত ন্যাপ‘এ যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলের উপনেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসন অর্জনের জন্য তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলের পক্ষে নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং জাতীয় পরিষদে স্বায়ত্বশাসনের দাবী উত্থাপন করেন। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করে। ৬৬ সালে মওলানা ভাসানীর আহ্বানে গণআন্দোলনের যে সূচনা হয়েছিল সেখানেও তিনি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছিলেন।
৬০-এর দশকের শেষের দিকে মশিউর রহমান যাদু মিয়া ন্যাপ-এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ও আইয়ূব বিরোধী ১১দফা আন্দোলনে তিনি জাতীয় পরিষদের ভিতরে ও বাইরে সোচ্চার দাবী উপস্থাপন করেন এবং আন্দোলনের পক্ষে মওলানা ভাসানীর আহ্বানে জাতীয় পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৬৯ সালে লায়েলপুরে কৃষক সম্মেলনে ইয়াহিয়া খানকে গাদ্দার বলার কারনে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রহসন মূলক বিচারের মাধ্যমে সাত বছর কারাদন্ড দেযা হয়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পল্টনে স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্ব মুহুর্তে যাদু মিয়া মওলানা ভাসানীর আহ্বানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক জনসভায় ন্যাপের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র পাঠ করেন।
স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারের আমলে দীর্ঘসময় কারাগারে বন্দি থাকার পর ১৯৭৫ সালে নভেম্বর মাসে তিনি কারা মুক্ত হন। ১৯৭৬ সালে ভারতের পানি আগ্রাসন ও ফারাক্কা বাঁধের প্রতিবাদে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চের সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনে করেন। তিনি ১৯৭৭সালে প্রগতিশীল, দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী শক্তির সমন্বয়ে প্রথমে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ও পরবর্তীতে জাতীয়তাবাদী দল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন। মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাপ-এর চেয়াররম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *